শরীর ও মন ভাল রাখতে কোন কোন অভ্যাস রপ্ত করবেন? প্রতীকী ছবি।
সুস্থ থাকতে গেলে কী করতে হবে? এখনকার সময়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এটাই। মেপে খাওয়া, শরীরচর্চা করা, নেশার মাত্রা কমানো— এই সব পরামর্শই দেবেন সকলে। এ সব তো আছেই, সেই সঙ্গে এমন কিছু অভ্যাস মেনে চলতে হয়, যা শরীরের পাশাপাশি মনও ভাল রাখবে। আর মনমেজাজ ভাল থাকলে যে কোনও কাজেই উৎসাহ পাওয়া যাবে। ‘হ্যাপি হরমোন’-এর নিঃসরণ হবে যা শরীরকে সতেজ ও চনমনে রাখবে।
এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, পরিমিত খাওয়া আর শরীরচর্চা যেমন জরুরি, তেমনই মনের চাপ কমাতে আরও কিছু কাজও করতে হবে। এখনকার ব্যস্ত সময়ের সবচেয়ে বড় অসুখ হল মানসিক চাপ। তাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেই আরও অনেক অসুখবিসুখ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে।
কী কী অভ্যাস মানবেন?
পছন্দের খাওয়াদাওয়া
শরীর ঠিক রাখতে হলে সুষম খাবার খেতেই হবে। চিকিৎসক বলছেন, এমন খাবার বাছুন যা খেলে মনের তৃপ্তিও হবে, আবার শরীরে পুষ্টির মাত্রাও বজায় থাকবে। ওজন কমাতে হবে বলে একঘেয়ে ডায়েট করতে গিয়ে বিরক্তি আরও বাড়ে। তখন আরও বেশি করে বাইরের খাবার খেতে মন চায়। তাই ঘরের খাবারকেই এমন ভাবে উপাদেয় বানাতে হবে যাতে ক্যালোরির মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে ও খাবারের প্রতি অনীহাও না তৈরি হয়।
মনের অশান্তি ঝেড়ে ফেলুন
সর্ব ক্ষণ মাথায় গিজগিজ করে হাবিজাবি চিন্তা? অল্পেই উদ্বেগ বাড়ে। মন সারা ক্ষণই চঞ্চল, অস্থির। অহেতুক দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত উদ্বেগ কেবল মানসিক চাপই বাড়ায় না, মারাত্মক মানসিক রোগের কারণও হয়ে উঠতে পারে। আর দুশ্চিন্তার সময় এমন কিছু হরমোনের নিঃসরণ হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।তাই মানসিক চাপ থেকে রেহাই পাওয়া খুব জরুরি। সে জন্য নিয়ম করে কিছুটা সময় বার করে মেডিটেশন বা ধ্যান করতেই হবে। নিয়মিত কিছু যোগাসন অভ্যাস করলেও মনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর হয়। প্রশিক্ষকের থেকে শিখে নিয়ে করাই ভাল।
যোগাযোগ বাড়ান
সমাজমাধ্যমে ডুবে থেকে সামাজিক যোগাযোগের রাস্তাগুলিই প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, কার নতুন জামা হল, কার গয়না হল, কে নতুন গাড়ি কিনল, কার সন্তান দারুণ রেজ়াল্ট করেছে, কার বই বেরোল, কার ঘরে কী সুখাদ্য রান্না হল, এইরকম আত্মঘোষিত ‘সুখী’ গৃহকোণগুলির বিজ্ঞাপন দেখতে দেখতে মনের বিষাদ আরও বাড়ে। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমও হয়ে উঠেছে সেই সমাজমাধ্যমই। তাই ভার্চুয়াল জগতের নেশা ছেড়ে, দেখা-সাক্ষাৎ, গল্প-আড্ডা বাড়াতে হবে। যত বেশি সামনাসামনি মেলামেশা করবেন, ততই মন আনন্দে থাকবে।
আলস্য একদম নয়
আলস্য পেয়ে বসতে দেবেন না। সব সময় নিজের লক্ষ্য সামনে রাখুন। হাসির ছবি দেখুন, মন ভাল করে এমন কাজ করুন। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে রাখবেন না। আমরা কাজ ফেলে রাখি যত ক্ষণ না সেটা আবশ্যিক হয়ে পড়ে। রোজ কী কী করবেন তার তালিকা বানিয়ে রাখুন। এমন কাজ করুন যাতে মনের উপর চাপ না পড়ে।
ভাল ঘুম
তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যান। চিকিৎসকের পরামর্শ, সুস্থ, সবল থাকতে রাতের ঘুম প্রয়োজনীয়। অকারণে তাই রাত জাগবেন না। ল্যাপটপ বা মোবাইলে গল্প করে সময় নষ্ট করবেন না রাতে। নিয়ম মেনে কাজ করলে রাত জেগে আপনাকে ফেলে রাখা কাজও করতে হবে না।