শীর্ষাসন কত ক্ষণ করা উচিত, বলে দিলেন প্রশিক্ষক। প্রতীকী ছবি।
দেহের সমস্ত ভার মাথার উপর দিয়ে দেহকে মাথার উপর দাঁড় করানোই হল শীর্ষাসন। কঠিন এই ব্যায়াম আয়ত্ত করতে অনেকটাই সময় লাগে। নিয়ম মেনে করলে শীর্ষাসনের উপকারিতা অনেক। এই আসন করলে মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেন ভাল মাত্রায় পৌঁছয়। মস্তিষ্কের কর্মদক্ষতা বাড়ে। স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়। শীর্ষাসনের ফলে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালনের হার বাড়ে। সঙ্গে বিপাকহার বাড়ে আর হজম ভাল হয়। ওজন তো কমেই। কিন্তু সমস্যা হল, শীর্ষাসন করার সময়ে যদি নিয়মের ব্যতিক্রম হয় এবং সময়ের গোলমালও হয়, তখনই তা বিপজ্জনক হতে পারে।
শীর্ষাসন বেশি ক্ষণ করলেই মুশকিল?
বলিউড অভিনেত্রী আলায়া সম্প্রতি তাঁর শীর্ষাসন করার একটি ভিডিয়ো ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন। সেখানে তাঁর যোগাসন প্রশিক্ষক মনুশ্রেয় শর্মা জানিয়েছেন, শীর্ষাসন শরীরের জন্য খুবই ভাল, কিন্তু একটানা অনেক ক্ষণ ধরে করলে তা নানা রকম ক্ষতির কারণ হতে পারে। ঘাড়, কাঁধ, হাত ও পিঠের পেশিতে মারাত্মক চাপ পড়ে যন্ত্রণা শুরু হতে পারে। ঘাড়ের স্নায়ুতে টান লেগে বিপদ হতে পারে।
এই প্রসঙ্গে যোগা প্রশিক্ষক অনুপ আচার্যের মত, “শীর্ষাসন সকলের জন্য নয়। এই আসন করার আগে অবশ্যই প্রশিক্ষকের মতামত নিতে হবে। শরীরে কোনও অসুখ থাকলে বা বিশেষ রকম ওষুধ খেলে এই আসন করা যাবে না। শীর্ষাসন কত ক্ষণ ধরে করতে হবে তা-ও প্রশিক্ষকই বলে দেবেন।”
কত ক্ষণ করবেন এই আসন?
অনুপবাবুর কথায়, যাঁরা প্রথম শুরু করছেন, তাঁরা ১০-১৫ সেকেন্ডের বেশি শীর্ষাসন করবেন না। এর বেশি করলেই রক্তচাপ বেড়ে ক্ষতি হতে পারে। ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে গেলে প্রশিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে তখন ১-২ মিনিট করা যেতে পারে। যদি কেউ প্রশিক্ষকের সাহায্য নিয়ে তাঁর সামনে এই আসন অভ্যাস করেন, তা হলে ৫ মিনিট অবধিও করা যায়। তবে সবটাই শরীরের অবস্থা বুঝে।
কারা করবেন না?
হার্টের অসুখ, নাক-কান-গালর রোগ, দাঁতের সমস্যা থাকলে এই আসন করা যাবে না। অনুপবাবুর কথায়, রক্তচাপ ওঠানামা করে যাঁদের, তাঁরা কখনওই শীর্ষাসন করবেন না। আসলে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় শরীরের ভার মাধ্যাকর্ষণ মেনে নীচের দিকে, অর্থাৎ দুই পায়ে পড়ে। কিন্তু যদি মাথার উপর ভর দিয়ে দেহকে দাঁড় করানো হয়, তখন রক্তের প্রবাহ বিপরীত দিকে হতে থাকে। ফলে রক্তের চাপও মাথায় বেশি পড়ে। তাই যাঁদের মাথাব্যথা, মাইগ্রেন বা ভার্টিগো আছে, তাঁরা যদি শীর্ষাসন করতে শুরু করেন তা হলে এই সব রোগ আরও বেড়ে যাবে। সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলোসিস থাকলেও এই আসন করা যাবে না।
প্রশিক্ষক জানাচ্ছেন, গোড়াতেই শীর্ষাসন করানো হয় না কাউকে। প্রথমে সর্বাঙ্গাসন, দণ্ডাসন দিয়ে শুরু হয়। ধীরে ধীরে শরীরকে সইয়ে নিয়ে তার পর শীর্ষাসন শেখানো হয়। তাই কেউ ইউটিউব বা কোনও বিজ্ঞাপন দেখে নিজে থেকে এই আসন অভ্যাস করতে যাবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।