বিয়ের আগে ক্র্যাশ ডায়েট কী বিপদ ডেকে আনতে পারে? ছবি: শাটারস্টক।
সামনেই বিয়ে, আর তার আগে এক মাসেই কমিয়ে ফেলতে হবে ৫ থেকে ৭ কেজি ওজন। অনেক কনেই এমন প্রত্যাশা নিয়ে ডায়েট করতে শুরু করেন। সকালে উঠে জল দিয়ে ওট্স, দুপুরে একটা আপেল, সারা দিন শুধু কয়েক গ্লাস ফলের রস, সন্ধ্যাবেলা এক কাপ গ্রিন টি। এমন ডায়েট করে অল্প দিনেই কয়েক কেজি ওজন কমিয়ে ফেলা যায় বটে, কিন্তু তার সঙ্গে উড়ে এসে জুড়ে বসে হাজার রকম শারীরিক সমস্যা। ঘন ঘন মাথা ঘুরে যাওয়া, চোখের তলায় কালি, কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া, ওজন কমলেও লেজুড় হয় এ রকম নানা সমস্যা। বিয়ের আগে চটজলদি ওজন কমাতে অনেকেই ক্র্যাশ ডায়েটিং করেন। তবে এর প্রভাব কতটা মারাত্মক হতে পারে, রইল হদিস।
১) এই প্রকার ডায়েটের ফলে শরীরে জলের ঘাটতি হতে পারে। এই সময়ে প্রয়োজনের তুলনায় কম ফ্যাট খাওয়া হয়, তখন দেহকোষ পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্যাট পায় না। সেই শূন্যস্থান পূরণ করতেই সে শরীরের অতিরিক্ত জল শুষে নেয়। যার ফলে গ্লাইকোজ়েন ভেঙে যায়। আর গ্লাইকোজ়েন ভাঙলেই জলশূন্যতা তৈরি হয়। ডিহাইড্রেশন হলে সঙ্গে সঙ্গে তার প্রভাব পড়ে ত্বক ও শরীরের উপর।
২) ক্র্যাশ ডায়েটের ফলে বিপাকক্রিয়ার হার কমে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। ফলে বিয়ের আগে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৩) শরীরে শক্তি আসে ক্যালোরি থেকে। হঠাৎ করে কম ক্যালোরির খাবার খেলে শরীরের পেশির উপর প্রভাব পড়ে। পেশির শক্তি কমে আসে। ক্লান্তি আসে। সারা ক্ষণ ঝিমুনি ভাব দেখা দেয়। কাজকর্মে অনীহা দেখা দেয়। এ রকম অবস্থায় বিয়ের মতো এত বড় অনুষ্ঠানের ধকল শরীর নিতে পারে না।
ক্র্যাশ ডায়েটের ফলে শরীরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় অনেকখানি। ছবি: সংগৃহীত।
৪) ক্র্যাশ ডায়েটের ফলে শরীরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় অনেকখানি। ফলে বিষণ্ণতা, ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন ইত্যাদি হতেই পারে। বিয়ের আগে এমন পরিবর্তন হওয়াটা মোটেই কাম্য নয়।
৫) বিয়ের সময়ে সকলেই জেল্লাদার ত্বক চান। ক্র্যাশ ডায়েটের ফলে দেহে সঠিক মাত্রায় ভিটামিন আর মিনারেলের ঘাটতি হয়। ফলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে যায়। চুল পড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত ঋতুচক্রের সমস্যাও দেখা যায়।
সঠিক নিয়ম মেনে ডায়েট করলে ১ মাসে ৩ থেকে ৪ কেজি ওজন কমানো সম্ভব। তবে সেই ডায়েট শুরু করতে হবে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে। ক্র্যাশ ডায়েটকে অনেক পুষ্টিবিদও সমর্থন করেন না।