পাল্স অক্সিমিটারেও বর্ণবৈষম্য!
কোভিডের সময়ে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে পাল্স অক্সিমিটার। চিকিৎসকেরাও পরামর্শ দিচ্ছেন, নিয়মিত রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষা করার। ৯৪-এর নীচে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে গেলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগও করতে হবে। তাই কোভিড আবহে এই যন্ত্রটি এখন ঘরে ঘরে। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা এই যন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, যাঁদের গায়ের রং চাপা তাঁদের ক্ষেত্রে এই যন্ত্র সঠিক ভাবে কাজ করে না। এখন প্রশ্ন হল, পাল্স অক্সিমিটার-এর মতো চিকিৎসার সরঞ্জামগুলি কি সাদা চামড়ার মানুষদের জন্যই বিশেষ ভাবে তৈরি, যা অন্য বর্ণের মানুষদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত করতে পারে?
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই নিয়ে এক গবেষণা চালিয়েছিলেন। সেই গবেষণায় উঠে আসা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পাল্স অক্সিমিটারের ভুল ফলাফলের ফলে ‘ব্ল্যাক এবং হিস্পানিক’ কোভিড রোগীদের শনাক্ত করা যায়নি। এই সব রোগীদের স্টেরয়েড ডেক্সামেথাসোন এবং অ্যান্টিভাইরাল রেমডেসিভিরের মতো দাওয়াইয়ের প্রয়োজন ছিল। সময় মতো রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়নি বলে তাঁদের অবস্থার অবন্নতি হয়।
প্রাথমিক ভাবে অক্সিমিটার ব্যবহার করে দেখা যায় সেই রোগীদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক। কিন্তু পরে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় যে, তাঁদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা অনেকটাই কম।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কৃষ্ণাঙ্গদের ক্ষেত্রে অক্সিজেন মাত্রায় হেরফের ধরা পড়েছে অক্সিমিটারে। যাঁদের গায়ের রং ফর্সা, তাঁদের ক্ষেত্রে অক্সিমিটারে অনেক বেশি সঠিক ফলাফল জানা যায়।
প্রতীকী ছবি।
তবে এই নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীরা নতুন প্রযুক্তির উপর কাজ করছেন যা পাল্স অক্সিমিটারের জগতে বিপ্লব আনতে পারে। এ ক্ষেত্রে কী উপায়ে আরও সঠিক ভাবে অক্সিজেনের মাত্রা নির্রাধণ করা যায়, সেই প্রচেষ্টাই চালাচ্ছেন গবেষকরা।