পেট পরিষ্কার করতে রোজ পালং শাক খাচ্ছেন, ক্ষতি হচ্ছে না তো? ছবি: শাটারস্টক।
এখন সারা বছরই বাজারে পালং শাকের দেখা মেলে। বাঙালি বাড়ির মধ্যাহ্নভোজ এবং নৈশভোজে থাকে পালং শাকের নানা পদ। বিশেষ করে বেগুন, কুমড়ো দিয়ে মরিচ ঝোল তো মাঝেমধ্যেই হয়ে থাকে। এ ছাড়া পালং শাক দিয়ে চিকেন, পনির খেতেও মন্দ লাগে না। প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এ এবং সি-তে ভরপুর এই শাক খাদ্যতালিকায় দৃষ্টিশক্তি বাড়ে, হজম ভাল হয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। হিমোগ্লোবিন কমে গেলেও ডায়েটে পালং শাক রাখলে উপকার পাওয়া যাবে। তবে অনেকেই শরীর চাঙ্গা রাখতে পালং শাকের রস কিংবা স্মুদি খেয়ে থাকেন। এই ভাবে শাক খেলে কি আদৌ উপকার পাওয়া যায়?
পুষ্টিবিদদের কেউ কেউ বলছেন এই ভাবে রোজ পালং শাকের রস কিংবা স্মুদি খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। পালং শাক আয়রনের ভাল উৎস, তবে এতে অক্সালেট নামক একটি যৌগও থাকে। এই যৌগকে শরীর সম্পূর্ণ ভাবে শোষণ করতে পারে না, ফলে জমাট বাঁধে কিডনিতে। ইদানীং কিডনিতে পাথর এমনকি গলব্লাডারে পাথর তৈরি হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ এই যৌগ। আমাদের শরীর যতটা পরিমাণে অক্সালেট শোষণ করতে পারে এক গ্লাস পালংয়ের রসে তার থেকে দশ গুণ বেশি অক্সালেট থাকে। এই যৌগ ক্যালশিয়ামের সঙ্গে জমাট বেঁধে কিডনি কিংবা গলব্লাডারে পাথর তৈরি করে।
যাঁদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে, তাঁদেরও এই শাক বুঝেশুনে খেতে হবে। ছবি: শাটারস্টক।
কী কী সমস্যা হতে পারে বেশি পালং শাক খেলে?
১) পালং শাকে থাকে অক্সালিক অ্যাসিড। এই উপাদানটি অতিরিক্ত পরিমাণে সঞ্চিত হলে, শরীরের প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ শোষণের মাত্রা কমে যায়। ফলে শরীরে খনিজ পদার্থের ঘাটতি দেখা যেতে পারে।
২) পালং শাকে হিস্টামিন থাকে। যা শরীরে অ্যালার্জির মতো উপসর্গ তৈরি করতে পারে। তবে এই উপসর্গ প্রবল হওয়ার আশঙ্কা কমই।
৩) পালং শাকের ফাইবারের পরিমাণ অনেকটা। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে গ্যাস অম্বলের সমস্যা, কিংবা পেটের গোলযোগ দেখা দিতে পারে। যাঁদের আগের থেকে কোলাইটিসের মতো সমস্যা রয়েছে, তাঁদের অনেককেই শাক খেতে নিষেধ করেন চিকিৎসকরা।
৪) যাঁদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে, তাঁদেরও এই শাক বুঝেশুনে খেতে হবে। এই শাক অতিরিক্ত খেলে থাইরক্সিন হরমোনের ক্ষরণ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।