প্রতীকী ছবি।
ক্যানসার মানেই কেমোথেরাপি। আর তার পর রেডিয়েশন। এমনই ধারণা রয়েছে অনেকের। কিন্তু বহু ক্যানসার আক্রান্তেরই কষ্ট হয় রেডিয়েশনের কঠিন পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে। এ বার দু’টি গবেষণার রিপোর্ট আশার আলো দেখাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, সকল ক্যানসার রোগীকে রেডিয়েশন না নিলেও চলবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের পর কেমোথেরাপি আর রেডিয়োথেরাপি না করালেও চলবে।
কেমোথেরাপি এবং রেডিয়োথেরাপি অনেকেরই শরীরে সয় না। কষ্ট বাড়িয়ে দেয় বহু ক্যানসার আক্রান্তের। তাই এ বার গবেষকরা চেষ্টা করছেন বোঝার, কোন রোগীর কেমোথেরাপি আর রেডিয়োথেরাপি লাগবে, আর কোন রোগীর ক্ষেত্রে তা ততটাও প্রয়োজন নয়।
নতুন একটি গবেষণা বলছে, কোলোন ক্যানসারে আক্রান্তদের ততটাও জরুরি নয় এই দু’টি থেরাপি। আর একটি গবেষণা বলছে, স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রেও অস্ত্রোপচারের পর আর না-ও লাগতে পারে রেডিয়োথেরাপি। এই গবেষণা নিয়ে আলোচনা হয়েছে ‘আমেরিকান সোসাইটি অব ক্লিনিক্যাল অনকোলজি’-র একটি বৈঠকে। কোলোন ক্যানসার সংক্রান্ত গবেষণার রিপোর্ট ইতিমধ্যেই ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতীকী ছবি।
বিভিন্ন দেশের চিকিৎসকের বক্তব্য, এই গবেষণা আশা দেখাচ্ছে। কারণ এর পর থেকে যাঁদের কেমোথেরাপি আর রেডিয়েশন প্রয়োজন, তাঁদের দিকেই বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া যাবে।
কোলোন ক্যানসার সংক্রান্ত আলোচনায় জানা গিয়েছে, বহু রোগীকে অস্ত্রোপচারের পর কেমোথেরাপি আর রেডিয়োথেরাপি দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা হয়তো এমনিতেই সুস্থ হয়ে গিয়েছে। তাতে বমিভাব, মাথাঘোরা, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এর পর যদি জানা যায় কোন রোগীর আর সে সব থেরাপি লাগবে না, তা হলে অনেক কষ্ট কম হতে পারে কিছু ক্যানসার আক্রান্তের। ৪৫৫ জন রোগীকে নিয়ে করা হয় সমীক্ষা। অস্ত্রোপচারের পর একটি রক্তপরীক্ষা করা হয়। দেখা যায় যে, অনেকের রিপোর্ট বলছে একেবারেই ক্যানসারমুক্ত হয়েছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে তাঁকে আর অন্য কোনও থেরাপি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের বক্তব্য, এই দু’টি ধাপ বাদ দেওয়া গেলে অনেক ক্যানসার আক্রান্তের জীবন বদলে যায়।
স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছেন, রেডিয়েশন দেওয়া এবং না দেওয়ার মধ্যে যাপনের মানের অনেকটা ফারাক রয়েছে। ৫০০ জন স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত মহিলার উপর পরীক্ষা করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, অস্ত্রোপচারের পর কেমোথেরাপি এবং রেডিয়োথেরাপি ছাড়াও বছর দুয়েকের মধ্যে আর কোনও ক্যানসারের কোষ ফিরে আসেনি তাঁদের শরীরে।