উদ্বেগ, অবসাদ থেকে পেটের রোগ বাড়তে পারে? ছবি: সংগৃহীত।
শরীরের যাবতীয় রোগের উৎস হল পেট। এমন ধারণা শুনেই বড় হয়েছেন। ছোট থেকে তাই পেট ঠান্ডা রাখার দিকেই জোর দিতেন বাড়ির বড়রা। কখনও চিরতার জল, কখনও কালমেঘ, কখনও মেথি-মৌরির জল। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বুঝেছেন, এই সব টোটকা আসলে অন্ত্র ভাল রাখে। অন্ত্রে বিভিন্ন রকম ব্যাক্টেরিয়া থাকে। তার মধ্যে ভাল ব্যাক্টেরিয়াগুলি বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় অনুঘটক হিসাবে কাজ করে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে শুধু শরীরের জন্য নয়, অন্ত্রে থাকা ভাল ব্যাক্টেরিয়াগুলি মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলে। মনখারাপ হলে অনেকেই তার সম্পূর্ণ দায় মস্তিষ্কের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন, তবে বিষয়টি কিন্তু ঠিক তেমনটা নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, পেটের সঙ্গে মস্তিষ্কের সংযোগ রক্ষা করে বিশেষ এক ধরনের মাধ্যম। চিকিৎসাশাস্ত্রে যা ‘গাট-ব্রেন অ্যাক্সিস’ নামে পরিচিত। দ্বিমুখী এই যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে কখনও অন্ত্র মস্তিষ্ককে, আবার কখনও মস্তিষ্ক অন্ত্রকে উদ্দীপিত করে। এই প্রক্রিয়ায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে অন্ত্রে থাকা মাইক্রোবায়োটা। তাই মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে অন্ত্রের মধ্যে থাকা ভাল এবং খারাপ— দু’ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে ভারসাম্য রাখা অত্যন্ত জরুরি।
তবে প্রত্যেকের শরীরে যে একই ধরনের মাইক্রোবায়েটা থাকবে, এমনটা নয়। চিকিৎসকদের মতে, আঙুলের ছাপের মতোই প্রত্যেকের অন্ত্রে থাকা ব্যাক্টেরেয়িরাগুলির প্রজাতি আলাদা। কার শরীরে কী ধরনের ব্যাক্টেরিয়া থাকবে, তা নির্ভর করে জিন, ডায়েট এবং পরিবেশের উপর। এই ব্যাক্টেরিয়াগুলি ধরন এবং প্রজাতির বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকলে মনের অসুখ সারানো সহজ হয়। অন্ত্রে থাকা ব্যাক্টেরিয়ার ভারসাম্যে অভাবকে চিকিৎসাশাস্ত্রে বলা হয় ডিজ়বায়োসিস। গবেষকেরা বলছেন, উদ্বেগ, অবসাদ, এমনকি অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগের কারণ হতে পারে এই ডিজ়বায়েসিস।
মন এবং পেট ভাল রাখতে কী ধরনের খাবার খাবেন?
ফাইবার জাতীয় খাবার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া টক দই, কিমচি, কম্বুচার মতো প্রোবায়োটিকে সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।