ছাড়ব বললেই মিষ্টি খাওয়া ছেড়ে দিতে পারেন? ছবি: সংগৃহীত।
জীবন থেকে অতিরিক্ত চিনি বাদ দিতে হবে। তা হলেই আক্ষরিক অর্থে জীবন গুড়ের মতো ‘মিষ্টি’ হয়ে উঠতে পারে।
বিষয়টা ঠিক বোঝা গেল না?
চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ— সকলেই বলেন, চিনি, মিষ্টি খাবার, কৃত্রিম শর্করা দেওয়া পানীয় খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারলে শরীর থাকবে নীরোগ। কিন্তু বললেই বা পারছে কে? এতশত জেনে চায়ে চিনি খাওয়া ছেড়েছেন। কিন্তু হাতের কাছে কেক, মাফিন, গুড়ের মিষ্টি দেখলে নিজেকে তো আটকাতে পারছেন না। শুধু কি তাই? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, স্বাস্থ্যকর এমন অনেক খাবারের মধ্যে কিন্তু চিনি লুকিয়ে থাকে। অজান্তে সেই সব খাবার খেলেও চিনি ছাড়ার চেষ্টা বৃথা হয়ে যায়।
কোন কোন খাবারে চিনি লুকিয়ে থাকে, আগে তা জেনে নিন:
১) কেচাপ, টম্যাটো সস্, স্যালাড ড্রেসিং, বারবিকিউ সসে যথেষ্ট পরিমাণ চিনি থাকে।
২) বিস্কুট, পাউরুটি, মাফিন, পিৎজ়া বেস, ‘রেডি টু কুক’ পরোটা কিংবা রুটি— সবেতেই শর্করা থাকে।
৩) বাজারজাত সিরিয়াল্স, গ্র্যানোলা, কর্নফ্লেক্স, মুসলিতেও কৃত্রিম শর্করা দেওয়া হয়।
৪) কৃত্রিম স্বাদ, গন্ধ, বর্ণযুক্ত ইয়োগার্ট, মিল্কশেক খেলেও রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে পারে।
৫) স্বাস্থ্যকর ভেবে অনেকেই প্রোটিন বার, পিনাট বাটার, ড্রাই ফ্রুট্স লাড্ডু খান। এই সব খাবারের মধ্যেও যথেষ্ট পরিমাণে শর্করা থাকে।
৬) বোতলবন্দি ফলের রস, নরম পানীয়েও কৃত্রিম শর্করা থাকে। তাই চোখ বন্ধ করে এ সমস্ত পানীয়ের উপর ভরসা করার কোনও কারণ নেই।
৭) মিষ্টি খাওয়া বন্ধ করেছেন, কিন্তু প্রক্রিয়াজাত খাবার খেয়েই চলেছেন। তাতে আখেরে কোনও লাভ হচ্ছে না। এই ধরনের খাবারে যথেষ্ট পরিমাণে চিনি থাকে।
কী ভাবে চিনি ছাড়া খাবার খাওয়ার বিষয়ে নিজেকে উদ্বুদ্ধ করবেন?
১) পুষ্টিবিদেরা বলছেন, সবসময়ে বাড়ি থেকে খাবার তৈরি করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। তবে বাইরের কেনা খাবার যদি খেতেই হয়, সে ক্ষেত্রে ‘লো সুগার’ বা ‘নো অ্যাডেড সুগার’ উল্লিখিত খাবার খেতে পারেন।
২) খাবার কেনার আগে অবশ্যই প্যাকেটে দেওয়া বিবরণ দেখে নেবেন। কোথাও কৃত্রিম শর্করা ব্যবহারের উল্লেখ থাকলে তা এড়িয়ে চলাই ভাল। তুলনায় স্টেভিয়া, মঙ্ক ফ্রুট দেওয়া খাবার নিরাপদ।
৩) খুব খিদে পেলে কিংবা রান্না করতে ইচ্ছে না করলেও প্রক্রিয়াজাত, প্যাকেটজাত খাবার খাওয়া যাবে না। যদি তা করতে পারেন, তা হলে শরীরে অতিরিক্ত চিনি প্রবেশের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া যাবে।