‘ফ্রোজ়েন শোল্ডার’-এর সমস্যা কেন হয়? ছবি: শাটারস্টক।
মাঝেমাঝেই ঘুম থেকে উঠে কিংবা অনেক ক্ষণ চুপচাপ বসে থাকার পর নড়াচড়া করতে গেলে কাঁধে প্রবল যন্ত্রণা হয়। মনে হয় যেন কাঁধটা শক্ত হয়ে গিয়েছে, কোনও ভাবেই নাড়ানো যাচ্ছে না। বিজ্ঞানের ভাষায় সমস্যাটির নাম ‘অ্যাডেসিভ ক্যাপসুলাইটিস’। তবে এই সমস্যাকে ‘ফ্রোজ়েন শোল্ডার’ নামেই বেশি চেনেন লোকজন। এই রোগে কাঁধের বল ও সকেটসন্ধি আক্রান্ত হয়। মূলত ৪০ থেকে ৬০ বয়সি ব্যক্তিদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি। পুরুষদের তুলনায় নারীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক পর্যায় কাঁধ ঘোরানোর সময় ব্যথা হয়, সময়ের যত এগোতে থাকে, ততই ব্যথা অসহ্যকর হয়ে ওঠে এবং ঘাড় ও কাঁধের অঞ্চল শক্ত হয়ে যায় তখন সমস্যা আরও বাড়ে। তার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে কাঁধ, ধীরে ধীরে নাড়ানো যায় হাত।
কী কী কারণে ঘাড়ে ব্যথা হয়?
১) কাজের সূত্রে একটানা অনেক ক্ষণ চেয়ারে বসে থাকা
২) ঘুমের সময় ভুল ভঙ্গিতে শোয়া
৩) অতিরিক্ত মানসিক চাপ
৪) হঠাত্ টান ধরা
প্রচন্ড ব্যথা হলে কী করবেন?
১) ল্যাভেন্ডার অয়েল: বহু প্রাচীন কাল থেকেই ব্যথা কমানোর কাজে ল্যাভেন্ডার ব্যবহার করা হয়ে এসেছে। ল্যাভেন্ডার অয়েল কিনে বাড়িতে রাখুন। ঘাড়ে ব্যথা হলে ল্যাভেন্ডার অয়েল লাগান। আরাম পাবেন।
২) স্নান: হালকা গরম জলে সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে চার-পাঁচ মিনিট স্নান করুন। স্নান করার সময় ঘাড় নাড়াচাড়া করবেন না। আস্তে আস্তে স্টিফ ঘাড় ঠিক হয়ে যাবে।
৩) আইস প্যাক: ঘাড়ের ব্যথা যদি অসহ্য হয়ে ওঠে তা হলে আইস প্যাক চাপা দিয়ে রাখুন। সঙ্গে সঙ্গে আরাম পাবেন।
৪) হিটিং প্যাড: ঘাড়ের উপর হিটিং প্যাড চেপে রাখুন। রক্ত সঞ্চালন বেড়ে ঘাড়ে ব্যথা কমবে।
রোজ যেগুলো করলে ঘাড়ে ব্যথা থেকে রেহাই পাবেন
ঘাড়ের ব্যথা যদি অসহ্য হয়ে ওঠে তা হলে আইস প্যাক চাপা দিয়ে রাখুন। ছবি: শাটারস্টক।
১) ঘুম: ঘুমের সঙ্গে কোনও রকম আপস করা যাবে না। ঘুমোনোর সময় খেয়াল রাখবেন যেন শোয়ার ধরন ঠিক থাকে। ভুলভাল ভঙ্গিমায় শোয়ার জন্য ঘাড়ে ব্যথা হয়। খুব বেশি উঁচু কিংবা শক্ত বালিশ নিয়ে ঘুমোবেন না।
২) কাজের মাঝে বিরতি: অফিসে কাজ করতে করতে যখনই ক্লান্ত লাগবে, কাঁধে যন্ত্রণা হবে তখন চেয়ারে বসে না থেকে মিনিট দশেকের বিরতি নিন। হাঁটাহাঁটি করুন।
৩) গাড়ি চালানোর সময় সতর্কতা : ‘লং ড্রাইভ’-এ যেতে অনেকেই পছন্দ করেন। তবে ফ্রোজ়েন শোল্ডার থাকলে একটানা অনেক ক্ষণ গাড়ি চালাবেন না।
৪) মানসিক চাপ কমানো: যতটা সম্ভভ নিজেকে স্ট্রেসমুক্ত রাখুন। স্ট্রেস বাড়লে ঘুম কম হবে, ক্লান্তি থেকে ঘাড়ে ব্যথা হবে।
৫) শরীরচর্চা: এই সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যায়াম ছাড়া উপায় নেই। রোজ ঘুম থেকে উঠে ঘাড়ের হালকা ব্যায়াম করুন। তা হলে ঘাড় সচল থাকবে। এ ক্ষেত্রে যোগাসন ভীষণ কার্যকর। মার্জারাসন, সেতুবন্ধনাস, গরুড়াসন, গোমুখাসনের মতো আসন নিয়মিত করলে এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন।