এসি ছাড়া থাকতে পারেন না? ছবি- সংগৃহীত
অফিস থেকে বাড়ি, বাড়ি থেকে অফিস। মাঝে যাতায়াতের সময়টুকু বাদ দিলে দিনের বেশির ভাগ সময়েই থাকতে হয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে। আর দিন দিন যে হারে গরমের দাপট বাড়ছে, তাতে এসি ছাড়া থাকাও দায়। তবে সারা ক্ষণ এই এসিতে থাকার অভ্যাস যে আদতে শরীরের জন্য ভাল নয়, তা জানেন অনেকেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাইরের হাওয়া-বাতাসের সঙ্গে একেবারে কোনও রকম সম্পর্ক না থাকলে ‘সিক বিল্ডিং সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। চিকিৎসকদেরও এ বিষয়ে একই মত। তাঁরা বলছেন, বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে ঘরের তাপমাত্রার পার্থক্য এতটাই যে, শরীর তৎক্ষণাৎ তার সঙ্গে মানিয়ে উঠতে পারে না। ফলে বুকে সর্দি বসে শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজ়মার মতো সমস্যা হতে পারে। এমনকি সেখান থেকে শ্বাসনালিতে সংক্রমণ হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
দিনের বেশির ভাগ সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে থাকার ফলে কোন কোন শারীরিক সমস্যা হতে পারে?
১) ‘ড্রাই আইজ়’
সারা ক্ষণ এসি চললে শরীর থেকে জল শুকিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলেন, চোখ ভাল রাখতে গেলে চোখের আর্দ্রতা বজায় থাকা দরকার। দীর্ঘ ক্ষণ এসিতে থাকলে চোখও শুষ্ক হয়ে পড়ে। চোখে নানা রকম অস্বস্তি হতে থাকে। এমনকি দৃষ্টিও ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।
২) মাথাব্যথা
বেশি ক্ষণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে কিন্তু মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। ‘অ্যানাল্স অব ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ নিউরোলজি’-তে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, যাঁরা দিনের বেশির ভাগ সময়ে অস্বাস্থ্যকর বাতাসযুক্ত পরিবেশে থাকেন তাঁদের ১৬ শতাংশ মানুষ প্রতি মাসে ১ থেকে ৩ দিন পর্যন্ত এমন মাথাব্যথার সমস্যায় ভোগেন। তার মধ্যে ৮ শতাংশের প্রায় রোজই কোনও না কোনও সময় মাথাব্যথা বা মাথাধরার মতো সমস্যা হয়।
৩) অ্যালার্জি
বদ্ধ ঘরের মধ্যে এসির মাধ্যমে আবর্তিত হতে থাকা দূষিত বায়ু অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী জীবাণুর আঁতুড়ঘর। বাতাসে থাকা অ্যালার্জেন শরীরে প্রবেশ করলে ‘হিস্টামিন’কে উদ্দীপিত করে তোলে। ফলে চোখ, নাক এবং গলায় অস্বস্তি হতে থাকে। কারও ক্ষেত্রে অনবরত হাঁচি, নাক থেকে জল পড়ার মতো লক্ষণও দেখা যায়।
৪) শরীরে জলের ঘাটতি
গরমকালে এমনিতেই শরীরে জলের ঘাটতি থাকে। এসি ঘরে থেকে তা মারাত্মক আকার নিতে পারে। বাইরে বেরোলে অতিরিক্ত ঘাম এবং ঘরে থাকা এসি, শরীরকে জলশূন্য করে দেয়। যার ফলে ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫) ক্লান্তি
অনেকেই বলেন, সারা ক্ষণ এসিতে বসে কাজ করলে নাকি ক্লান্তি কাটতে চায় না মোটে। ফলে কাজের গতিও শ্লথ হয়ে পড়ে।