কমপক্ষে যদি ৬ ঘণ্টাও টানা ঘুম না হয়, তা হলে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি শরীর সুস্থ রাখার অন্যতম শর্ত হল পর্যাপ্ত ঘুমোনো। যে কোনও শারীরিক সমস্যা থেকে দূরে থাকতে ঘুম অত্যন্ত জরুরি। সারা দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোনো বাধ্যতামূলক। কিডনি, লিভার, মানসিক অবসাদ, ডিমেনশিয়া, আর্থরাইটিসের মতো হাজার সমস্যার সমাধান লুকিয়ে আছেই ঘুমেই।
শুধু শারীরিক সমস্যা থেকে বাঁচতে নয়, কাজে গতি বাড়াতে এবং শরীর চনমনে রাখতেও অত্যন্ত জরুরি ঘুম।
আধুনিক ব্যস্ততম জীবনে ঘুমের জন্য সময় বার করাই দুষ্কর। ৬ ঘণ্টাও ঠিক করে ঘুমোনোর সময় পাওয়া যায় না। চিকিৎসকদের মতে, এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের রোজ অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। কিন্তু সেখানে কমপক্ষে যদি ৬ ঘণ্টাও টানা ঘুম না হয়, তা হলে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অবসাদের লক্ষণগুলি রোগীর ঘুমিয়ে পড়ার ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
১) কম ঘুম মানসিক অবসাদ বাড়িয়ে তোলে। ২০০৫ সালের একটি সমীক্ষা বলছে, যাঁরা উদ্বেগ বা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগই গড়ে রাতে ছ’ঘণ্টার কম ঘুমোন। অনিদ্রা আর মানসিক অবসাদ পরস্পর এতটাই নিবিড় সম্পর্কযুক্ত যে, একটি আক্রান্তকে অন্যটির দিকে টেনে নিয়ে যায়। অবসাদের লক্ষণগুলি রোগীর ঘুমিয়ে পড়ার ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করতে পারে।
২) ‘শার্প ওয়েভ রিপালস’ নামে পরিচিত মস্তিষ্কের একটি ক্রিয়া স্মৃতিকে একত্রিত করতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের নিওকর্টেক্স ও হিপ্পোক্যাম্পাসের সহায়তায় এই স্মৃতি স্থায়ী জ্ঞানে রূপান্তরিত হয়। গভীর ঘুমের মধ্যে এই প্রক্রিয়াটি সবচেয়ে ভাল হয়। সুতরাং দেরি করে ঘুমোতে গেলে এই প্রক্রিয়াটি সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয় না। ফলে ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা যায়।
৩) ঘুম কম হলে বেশ কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। চিকিৎসকদের মতে, ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, যাঁরা অনিদ্রায় ভুগছেন, তাঁরা অন্য একটি দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যসঙ্কটেও ভুগছেন। তা শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে। ডায়াবিটিস, স্ট্রোক, অনিয়মিত হৃদ্স্পন্দন, হৃদ্রোগ বা উচ্চ রক্তচাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ ঘুমের অভাবের সঙ্গে জন্ম নেয়।