Jhansi Hospital Tragedy

সদ্যোজাতদের মৃত্যু কি দেশলাইয়ে

শুক্রবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ ঝাঁসির মহারানি লক্ষ্মীবাই মেডিক্যাল কলেজের নিয়োনেটাল ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট বা এনআইসিইউ (নিকু)-তে আগুন লেগেছিল। তাতে দশটি শিশুর মৃত্যু হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:৪৯
Share:

শুক্রবার রাতে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসিতে মহারানি লক্ষ্মীবাঈ মেডিক্যাল কলেজে আগুন লাগে। ছবি: পিটিআই।

আগুনের অল্প তাপে শক্ত পাইপ নরম করে নিয়ে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটরে জুড়তে চেয়েছিলেন এক জন নার্স। সে জন্য জ্বলন্ত দেশলাই কাঠি সামনে ধরামাত্রই ওই যন্ত্রে আগুন লেগে যায়, দাবি উত্তরপ্রদেশে হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবকের। যদিও সেই দাবি খারিজ করে ঝাঁসির ওই সরকারি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য সরকারের দাবি, যন্ত্রটিতে শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন ধরেছে। যে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে সদ্যোজাত দশটি শিশুর।

Advertisement

শুক্রবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ ঝাঁসির মহারানি লক্ষ্মীবাই মেডিক্যাল কলেজের নিয়োনেটাল ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট বা এনআইসিইউ (নিকু)-তে আগুন লেগেছিল। তাতে দশটি শিশুর মৃত্যু হয়। তার মধ্যে তিন জনের পরিচয় আজ রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। পুলিশের দাবি, ৫২-৫৪ জন শিশু ঘটনার সময়ে নিকুতে ছিল বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ১৬ জন উদ্ধার হওয়া শিশুর চিকিৎসা সেখানেই হচ্ছে। তাদের বয়স তিন-চার দিন। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নরেন্দ্র সিংহ সেঙ্গারের দাবি, “কিছু শিশু জেলা হাসপাতাল ও বেসরকারি নার্সিংহোমে রয়েছে। কয়েক জনকে বাবা-মা বাড়ি নিয়ে গিয়েছেন।” ক’জন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তারা এখন কোথায় ও কী অবস্থায় রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগে আজ সকালে কিছু অভিভাবক প্রথমে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা ও পরে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান। হাসপাতাল সূত্রের দাবি, শিশুদের পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি এড়াতেই অভিভাবকদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছিল না।

Advertisement

অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা অকেজো ছিল। অগ্নিনির্বাপক রাসায়নিকের সিলিন্ডার দিয়ে জানালার কাচ ভেঙে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়েছে। উপমুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক অবশ্য মানতে চাননি তা। ওই মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের দাবি, গত ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালে নিরাপত্তার অডিট এবং জুনে অগ্নিনির্বাপণের মহড়া হয়েছিল।

আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকে শীর্ষে রেখে রাজ্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। বলা হয়েছে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশও হয়েছে। ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিপির রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মৃত শিশুগুলির পরিবার পিছু কেন্দ্র দু’লক্ষ এবং রাজ্য পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়েছে।

এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক আকচাআকচি। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রয়াগরাজে একটি জনসভায় দাবি করেন, তিনি রাতভর জেগেছিলেন উদ্ধারকাজের খোঁজ নিতে। সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব বলেছেন, যোগীর উচিত প্রচার ছেড়ে এসে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর দুর্দশা ঘোচাতে সক্রিয় হওয়া। এই ঘটনা সরকার ও প্রশাসনের গাফিলতির জের, বলেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement