শরীর ভাল নেই, তবুও মন শক্ত করে লড়াই চালাচ্ছেন অভিনেত্রী শ্রুতি হাসান।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী শ্রুতি হাসান পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস) এবং এন্ডোমেট্রিয়োসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি হরমোনজনিত সমস্যারও সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। শরীর ভাল নেই, তবুও মন শক্ত করে লড়াই চালাচ্ছেন অভিনেত্রী।
ইনস্টাগ্রামে শরীরচর্চার একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে শ্রুতি লেখেন, ‘‘আমার সঙ্গে শরীরচর্চা করুন। শরীরের হরমোনাল ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য আমাকে কঠিন লড়াই চালাতে হচ্ছে। আমি পিসিওএস এবং এন্ডোমেট্রিয়োসিসে-এর সমস্যায় ভুগছি। মহিলাদের অবশ্যই জানা উচিত, এই সমস্যার সঙ্গে কী ভাবে লড়াই করা যায়। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে আমি শরীরচর্চাকেই বেছে নিয়েছি। সঙ্গে অবশ্যই নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস এবং পরিমিত ঘুমও প্রয়োজন। আমার শরীর এই মুহূর্তে ঠিক না থাকলেও মনকে শক্ত করেছি। এই রোগের কাছে আমি কিছুতেই হারব না।’’
পিসিওএস রোগ সম্পর্কে সবার কমবেশি ধারণা থাকলেও এন্ডোমেট্রিয়োসিসে রোগটা ঠিক কী, তা অনেকেরই আজানা।
ঋতুস্রাবের সময়ে তলপেটের ব্যথায় অনেক মহিলাই ভোগেন। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে সেই ব্যথা দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ঋতুস্রাবের পাঁচ থেকে সাত দিন আগে যন্ত্রণা হচ্ছে। চিকিৎসকের কথায়, এগুলি এন্ডোমেট্রিয়োসিসের লক্ষণ। এই রোগ থাকলে সন্তানধারণে সমস্যা হয়। তাই এই রোগের লক্ষণ দেখলে বাড়তি সতর্কতা নিতেই হবে।
কী এই রোগ?
জরায়ুর ভিতরের একটি স্তর হল এন্ডোমেট্রিয়াম। প্রতি মাসে জরায়ুর এই এন্ডোমেট্রিয়াম অংশের স্তর খসেই ঋতুস্রাব হয়। সেই রক্ত সন্তানপ্রসবের পথ দিয়ে জরায়ু থেকে বেরিয়ে শরীরের বাইরে চলে আসে। কিন্তু এন্ডোমেট্রিয়াম জরায়ুর বাইরে, তলপেটের যে কোনও জায়গায় বা শরীরের অন্য কোথাও চলে এলে, তাকে বলে এন্ডোমেট্রিয়োসিস। শরীরের অন্য কোথাও এন্ডোমেট্রিয়াম চলে গেলে, সেখানে ওই স্তর খসে যে রক্তপাত হয়, তা বেরোতে না পেরে সেই স্থানেই জমাট বাঁধতে শুরু করে। আশপাশের কোষগুলিতে চাপ তৈরি হয়। এর থেকে সিস্ট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ডিম্বাশয়, তলপেটের পিছনে, মূত্রথলি, বর্জ্য নির্গমনের পথ, সন্তান নির্গমনের পথের গোড়ায় এন্ডোমেট্রিয়াম বেশি দেখা যায়। এই রোগকেই বলা হয় হয় এন্ডোমেট্রিয়োসিস।
কোন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?
১) এন্ডোমেট্রিয়োসিসের ফলে যৌনমিলনের সময়ে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এই ব্যথা যৌনমিলনের পরেও বেশ কিছু দিন থাকে।
২) মলত্যাগ করার সময়ে ও প্রস্রাব করতে গেলে ব্যথা হয় তলপেটে। ঋতুস্রাব চলার সময় এই সমস্যাগুলি আরও বেড়ে যায়।
৩) এন্ডোমেট্রিয়োসিসের সমস্যা থাকলে ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে। পাশাপাশি দুটি ঋতুস্রাবের মাঝে ‘স্পটিং’-এর সমস্যাও দেখা যেতে পারে।
৪) এই রোগে আক্রান্ত হলে সন্তানধারণের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়।