রোগা হওয়ার ডায়েটে ঘড়ির কাঁটা ধরে খেতে হবে খাবার। ছবি: সংগৃহীত।
সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কোনও বিকল্প নেই। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিংবা ভিতর থেকে ফিট থাকতে নিয়ম করে সুষম খাবার খাওয়া জরুরি। তবে ফিট থাকার শেষ কথা যে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, তা কিন্তু নয়। কী খাচ্ছেন, তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কখন খাচ্ছেন। খাওয়ার সময়টাও অত্যন্ত জরুরি। অথচ এই ব্যস্ততম জীবনে নিজের জন্য সময় বার করাই সবচেয়ে কঠিন। কাজ করতে করতে কখন যে সময় পেরিয়ে যায়, খেয়াল থাকে না। খিদে পেলে তখন মনে পড়ে খাবারের কথা। তখন খেলে হয়তো খিদে মেটে, কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এই অভ্যাসের ফলে শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওজন বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হল সময়ে না খাওয়া। তাই রোগা হওয়ার ডায়েটে শুধু ক্যালোরিহীন খাবার রাখলেই হবে না, ঘড়ির কাঁটা ধরে খাবারও খেতে হবে।
প্রতিটি খাবারের মধ্যে অন্তত ৩ ঘণ্টার ফারাক থাকতে হবে। ছবি: সংগৃহীত।
সকাল, দুপুর এবং রাত, এই তিনবেলার খাবার হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে মাঝের সময়েও একেবারে পেট খালি রাখলে চলবে না। বেশি ক্ষণ পেট খালি থাকলে গ্যাস-অম্বলের ভয় থাকে। কিন্তু কত ক্ষণ অন্তর খাবার খাওয়া জরুরি, সেটা অনেকেই বুঝতে পারেন না। কেউ কেউ বলেন দু’ঘণ্টা পর পর খাবার খাওয়া যেতে পারে। তাতে ভারসাম্য বজায় থাকে। বিশেষ করে যাঁরা ডায়াবিটিসে ভুগছেন, পেট খালি রাখা তাঁদের একেবারেই ঠিক হবে না। এতে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘অল্প অল্প করে খাবার বার বার খাওয়াই ভাল। তবে সারা দিনে যে যত বারই খান, প্রতিটি খাবারের মধ্যে অন্তত ৩ ঘণ্টার ফারাক থাকতে হবে। সব ক’টি মিল যে ভারী হতে হবে, তার কোনও মানে নেই। বরং হালকা খাবার কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর খেতে হবে।’’ সময়ের ব্যবধান মেনে খাবার খাওয়ার সুফল কী? চিকিৎসক বলেন, ‘‘অনেক ক্ষণ না খেয়ে থাকলে খিদের মাত্রা বেড়ে যায়। তখন একসঙ্গে অনেকটা খাবার খেয়ে নেওয়ার প্রবণতা থাকে। তাই প্রবল খিদে পেয়েছে এমন যেন কখনও না হয়। বরং অল্প খিদে থাকতেই কিছু খেয়ে নেওয়া ভাল।’’
তবে এই নিয়ম যে সকলের জন্য প্রযোজ্য, তা অবশ্য মনে করেন না পুষ্টিবিদ এবং জীবনধারা সহায়ক অনন্যা ভৌমিক। তিনি বলেন, ‘‘শরীরের বিপাক হারের উপর নির্ভর করে কত ক্ষণ অন্তর খাওয়া জরুরি। এমনিতে তিন থেকে চার ঘণ্টা অন্তর খেলেই ভাল। তবে গোটা বিষয়টি দাঁড়িয়ে আছে ব্যক্তিগত জীবনশৈলীর উপরে। কখন ঘুমোতে যাচ্ছেন, সকালে কখন উঠছেন, শারীরিক পরিশ্রম কতটা, শরীরচর্চার অভ্যাস রয়েছে কি না, এই বিষয়গুলি খাওয়াদাওয়া এবং তার সময়ের উপর নির্ভর করে। তবে সময় মেপে খাওয়া খুব জরুরি। কিন্তু সব সময়ে সে নিয়ম মানতে চাইলেও তা হয়ে ওঠে না। সে ক্ষেত্রে সঙ্গে কিছু ড্রাই ফ্রুটস কিংবা অন্যান্য শুকনো খাবার রাখা যেতে পারে। একেবারে পেট খালি না রেখে কাজের ফাঁকে খেয়ে নিলেই হল।’’