ইদানীং পুষ্টিবিদদের পরামর্শ ছাড়া কেবল নেটমাধ্যমের উপর ভরসা করেই অনেকেই বিভিন্ন রকম ডায়েট মেনে চলতে শুরু করেন। ছবি: সংগৃহীত
খাবারে নুন-চিনি কম বা বেশি হলে শুধু রান্নার স্বাদ নষ্ট হয় না, ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্বাস্থ্যও। পুষ্টিবিদদের মতে খাবারে অতিরিক্ত নুন-চিনি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই অনেকেই ওজন ঝরানোর আশায় খাদ্যতালিকা থেকে নুন ও চিনি একেবারেই বাতিল করে দেন। কিন্তু জানেন কি, শরীরে এই উপাদানগুলির ঘাটতি হলেও দেখা দিতে পারে সমস্যা!
সুস্বাস্থ্য পেতে শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রায় সোডিয়াম ও শর্করার প্রয়োজন। নুন একটি খনিজ, যা শরীরে তরল ও অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখতে, স্নায়ুগুলির কার্য পরিচালনা করতে এবং পেশি সংকোচন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। অন্য দিকে, চিনি হল এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট যা আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দেয়।
ইদানীং পুষ্টিবিদদের পরামর্শ ছাড়া কেবল নেটমাধ্যমের উপর ভরসা করেই অনেকেই বিভিন্ন রকম ডায়েট মেনে চলতে শুরু করেন। সেই ডায়েটে চিনি ও নুন একেবারে থাকে না বললেই চলে। দীর্ঘ দিন এই প্রকার ডায়েট মেনে চললে শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে।
একেবারে চিনি খাওয়া বন্ধ করে দিলে শরীরের কী ক্ষতি হতে পারে?
চিনিজাতীয় শর্করা থেকেই শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তির সঞ্চার হয়। হঠাৎ তিনি খাওয়া বন্ধ করে দিলে আপনার কর্মদক্ষতা কমে যেতে পারে। শরীরে ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব আসতে পারে। কাজে মনোযোগ বসানো কঠিন হয়ে যেতে পারে।
প্রতীকী ছবি
একেবারে নুন খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন? কী ক্ষতি হতে পারে জানেন?
নুন হল আয়োডিনের ভাল উৎস। নুনে থাকা সোডিয়াম ক্লোরাইড ইলেকট্রোলাইটকে ব্যালেন্স করতে সাহায্য করে। শরীরে আয়োডিনের ঘাটতি দেখা গেলে থাইরয়েড গ্রন্থি ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। যার ফলে শরীরে হাইপোথাইরয়েডিজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি আয়োডিন-যুক্ত নুন শরীরে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। তাই, পরিমিত মাত্রায় নুন খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
অতিরিক্ত মাত্রায় নুন-চিনি খাওয়া কী ভাবে বন্ধ করবেন?
১) খাবার টেবিলে নুন রাখার পাত্র রাখবেন না। অনেকেরই পাতে নুন নিয়ে খাওয়ার স্বভাব আছে। অবিলম্বে এই অভ্যাসে বদল আনুন।
২) বাজারচলতি কোনও প্রক্রিয়াজাত খাবার কেনার আগে প্যাকেটের গায়ে নুন ও চিনির পরিমাণটা ভাল করে দেখে নেবেন।
৩) গরমে অনেকেই ঠান্ডা পানীয় কিংবা সোডা জাতীয় পানীয় খেয়ে থাকেন। এগুলি এড়িয়ে চলাই ভাল। তার পরিবর্তে ফল অথবা ফলের রস খেতে পারেন।
৪) সরাসরি চিনি না খেয়ে চিনির পরিবর্তে কিশমিশ, গুড়, মধু ইত্যদি খেতে পারেন। তবে তা যেন অবশ্যই পরিমিত মাত্রায় হয়, সে দিকে নজর রাখবেন।