রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব মানেই ডায়াবিটিস নয়! ছবি: শাটারস্টক।
বার বার প্রস্রাবের ঠেলায় রাতের ঘুমের বারোটা বাজছে? রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে না, তাই সারাদিন শরীরে থেকে যাচ্ছে ক্লান্তি। অল্পেই রেগে যাচ্ছেন। চিকিৎসার পরিভাষায় এই সমস্যার নাম ‘নকচুরিয়া’। অর্থাৎ একাধিক বার প্রস্রাবে যাওয়ার জন্য রাতে ঘুম নষ্ট। এই লক্ষণ দেখে অনেকেই মনে করেন, এই বুঝি ডায়াবিটিস বাসা বাঁধল শরীরে। তবে এর পিছনে আরও বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। চল্লিশের কোঠায় অনেক পুরুষই এই সমস্যার সম্মুখীন হন। পঞ্চাশের পর থেকে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
কী কী কারণে হতে পারে নকচুরিয়া?
১) সুস্থ থাকতে বেশি করে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন সব পুষ্টিবিদই। তবে তেষ্টা অনুযায়ী জল খাওয়া উচিত। দিনে দেড়-দু’লিটার জল খেলেই অনেক শারীরিক সমস্যা দূরে রাখা যায়। চা, কফি কিংবা অ্যালকোহল বেশি খেলেও রাতে প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়তে পারে।
২) কর্মসূত্রে অনেককেই রাত জাগতে হয়। বডি ক্লক পরিবর্তন হলেও নকচুরিয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়।
৩) ডায়াবিটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ে। কিডনির ওষুধ খেলেও প্রস্রাব বেশি পায়। রাতে ঘুম থেকে উঠতে হয়।
৪) হার্টের অসুখ, কিডনিতে স্টোন এবং প্রস্টেটের সমস্যা থেকেও এমনটা হতে পারে। শুধু পুরুষরাই নয়, গর্ভাবস্থায় এবং মেনোপজের পর নকচুরিয়ার সমস্যায় ভোগেন অনেক মহিলাও।
কী ভাবে রোগের ঝুঁকি কমাবেন?
নকচুরিয়া-র সমস্যা এড়াতে হলে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতেই হবে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার দু’ঘণ্টা আগে জল পান কমিয়ে দিন। মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার ওষুধ খেলে তা দিনের বেলা খাওয়ার চেষ্টা করুন, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনেও রোগীর কোনও উন্নতি না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
দিনে কী পরিমাণ জল খাচ্ছেন, আর কত বার প্রস্রাব হল— জানার জন্য একটি ডায়েরিতে তিন দিনের হিসাব লিখে রাখতে পারেন। এই ডায়েরি দেখে রোগের গতিবিধি ধরতে পারেন চিকিৎসক। ইউরিন কালচার করিয়ে দেখে দেখে নিতে পারেন, মূত্রনালিতে কোনও সংক্রমণ রয়েছে কি না। এ ছাড়া অ্যানিমিয়া, থাইরয়েড, কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিস পরীক্ষাও করিয়ে নিতে পারেন।