বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, টাইপ-২ ডায়াবিটিস থাকলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ছবি-প্রতীকী
মানুষের ভুলো মন নিয়ে অনেকেই নানা রকমের ব্যঙ্গ করে থাকেন। কিন্তু স্মৃতিভ্রম কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তার উদাহরণ হল ডিমেনশিয়া। ‘ল্যানসেট’ পত্রিকার প্রকাশিত এক রিপোর্ট বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ভারতবর্ষে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হবেন প্রায় এক কোটি চোদ্দ লক্ষেরও বেশি মানুষ। ২০১৯ সালে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতবর্ষে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৮ লক্ষ। অর্থাৎ, মাত্র কয়েক দশকে ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে প্রায় দুশো শতাংশ।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, টাইপ-২ ডায়াবিটিস থাকলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তবে যে সব ডায়াবেটিক রোগীরা জীবনধারায় নিয়ম মেনে চলবেন, তাঁরা এই ঝুঁকি এড়াতে পারেন।
অতিরিক্ত মদ্যপান বাড়াতে পারে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি। ছবি- সংগৃহীত
চিনের ‘সাংহাই জিয়াও টং ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন’-এর এক গবেষক ইংলি লু বলেছেন, ‘‘টাইপ ২ ডায়াবিটিস একটি বিশ্বব্যাপী মহামারী, যা প্রতি ১০ জনের মধ্যে এক জনকে প্রভাবিত করে এবং ডায়াবিটিস থাকলে ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়। আমরা খুঁজে বার করার চেষ্টা করেছি কোন স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলি মেনে চললে টাইপ ২ ডায়াবিটিস থাকলেও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।’’
৬০ বছর বা তার বেশি বয়সি ১,৬৭,৯৪৬ জনকে নিয়ে এই গবেষণা চালানো হয়। সমীক্ষায় সাতটি অভ্যাসকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা মেনে চললে ডিমেনশিয়ার আশঙ্কা কমানো সম্ভব। কী কী অভ্যাস মেনে চলতে হবে?
১) মদ্যপানে লাগাম
২) ধূমপান বন্ধ
৩) দিনে ৭৫ মিনিট ভারী শরীরচর্চা
৪) আড়াই ঘণ্টার শারীরিক কসরত
৫) দিনে ৭-৯ ঘণ্টার ঘুম
৬) পুষ্টিকর খাদ্যাভাস
৭) সামাজিক অনুষ্ঠানগুলিতে যোগ দেওয়া। ভার্চুয়াল জগতে ডুবে থাকার অভ্যাস ত্যাগ করা
আগে ৬৫ বছর বয়সিদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা গেলেও সম্প্রতি পঞ্চাশের কোঠায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে বাড়ছে ডিমেনশিয়ার প্রবণতা। অ্যালঝাইমার্সের মতো কঠিন ডিমেনশিয়া নিরাময় করা সম্ভব নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সুস্থ জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে এই রোগের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।