নাক হারালে নাক পাওয়া যায়! —ফাইল চিত্র
হাতের উপর গজিয়ে উঠেছে আস্ত একটি নাক! না, কল্পবিজ্ঞানের পাতা থেকে উঠে আসা গল্প নয়, বাস্তবেই ঘটেছে এমন ঘটনা। বিজ্ঞানের গুণে। আর সেই কৃত্রিম অঙ্গের সহায়তায় বাদ যাওয়া নাক ফিরে পেয়েছেন ফ্রান্সের এক ক্যানসার রোগী। ফ্রান্সের টউলাউস ইউনিভার্সিটি হসপিটাল ও ক্লদিয়াস রেগাড ইনস্টিটিউটের গবেষকদের যৌথ প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে এই কাজ।
২০১৩ সালে নাসিকাগহ্বরে ক্যানসার ধরা পড়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলার। বাদ দিতে হয় নাকের একটি বড় অংশ। রেডিয়োথেরাপি ও কেমোথেরাপির পর ধীরে ধীরে গোটা নাকই কার্যত বাদ পড়ে যায় তাঁর। নাক ফিরে পেতে বহু চেষ্টা করেন ওই মহিলা। প্রস্থেটিক নাক লাগানোর চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এর পরই নতুন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃত্রিম নাক লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
নাকে যে হাড় বা কার্টিলেজ থাকে, অবিকল তারই মতো এক বিশেষ ধরনের ‘জৈব উপাদান’ দিয়ে তৈরি করা হয় নাকের কৃত্রিম হাড়। ‘থ্রিডি প্রিন্টার’-এ নাকের মূল কাঠামোটি তৈরি করা হয়। এর পর সেই কাঠামোটি ওই মহিলার হাতের উপর বিশেষ ভাবে বসিয়ে দেন চিকিৎসকরা। ‘স্কিন গ্রাফটিং’ পদ্ধতিতে হাতের থেকেই কোষ, কলা ও চামড়া নিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় সেটি। নাক পুরোপুরি গড়ে উঠতে সময় লাগে প্রায় ২ মাস।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে শল্যচিকিৎসকরা হাত থেকে বিচ্ছিন্ন করে বাদ যাওয়া নাকের জায়গায় বসিয়ে দেন নবনির্মিত অঙ্গটি। মুখের ত্বক ও মাংসপেশিতে থাকা রক্তবাহও জুড়ে দেওয়া হয় সেই নতুন নাকে। নাসিকা প্রতিস্থাপনের পর টানা দশ দিন হাসপাতালেই থাকতে হয় রোগীকে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেও টানা ওষুধ খেতে হয়। তবে যাবতীয় লড়াইয়ের শেষে রোগী এখন প্রায় সুস্থ বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি একটি বিজ্ঞানপত্রিকায় গোটা ঘটনার কথা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।