কোলন ক্যানসারের কোন উপসর্গগুলি দেখলে সতর্ক হবেন? ছবি: সংগৃহীত।
কোলন ক্যানসার মূলত মধ্য বয়স বা তার থেকে বেশি বয়সি ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে কম বয়সেও দেখা দিতে পারে এই রোগ। প্রাথমিক ভাবে কোলনের ভিতর উপবৃদ্ধি হিসেবে কোলন ক্যানসারের সুত্রপাত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই উপবৃদ্ধিগুলি ক্যানসারে রূপান্তরিত হতে পারে। মলদ্বারে প্রদাহ, মলত্যাগের সময় তীব্র যন্ত্রণা কিংবা রক্তপাতের মতো সমস্যা কোলন ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। সম্প্রতি তাইওয়ানের চ্যাঙ্গ গুঙ্গ মেমোরিয়াল হসপিটালের করা একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, অল্পবয়সিদের মধ্যে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ার প্রবণতা প্রতি বছর ৩.২ শতাংশ হারে বাড়ছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৫০ বছরের নীচে যাঁদের বয়স, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই কোলন ক্যানসারের উপসর্গ দেখেও খুব বেশি গুরুত্ব দেন না, তাই অনেক দেরিতে সেই রোগ ধরা পড়ে।
চিকিৎসকদের মতে, যে কোনও বয়সেই কোলন ক্যানসারের উপসর্গগুলি দেখলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কোন কোন উপসর্গ দেখলেই সতর্ক হবেন, রইল হদিস।
১। দিনে কত বার মলত্যাগের প্রয়োজন অনুভূত হয়, আচমকা তার তারতম্য ঘটা কোলন ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ।
২। আচমকা বমি বমি ভাব, গা গুলিয়ে ওঠা, ওজন কমে যাওয়াও কোলন ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
৩। কোলন ক্যানসারের রোগীদের মলত্যাগের সময় ব্যথা ও যন্ত্রণা অনুভূত হতে পারে। মলত্যাগের পরেও মল রয়ে যাওয়ার অনুভূতি দেখা যায়। সরু ফিতের মতো মল নির্গত হওয়াও কোলন ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।
৪। মলদ্বারে রক্তপাত কোলন ক্যানসারের অন্যতম প্রধান লক্ষণ। অর্শ্বের সমস্যাতেও মলদ্বারের রক্তপাত হয়। তবে এই রক্তপাতের মধ্যেও রয়েছে তারতম্য। অর্শ্ব রোগীদের ক্ষেত্রে যে রক্তপাত হয় তা সাধারণত লাল। অপর দিকে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই রক্ত কালচে রঙের হয়। কালচে রং দেহের অভ্যন্তর থেকে নির্গত রক্তের সূচক।
৫। তলপেটে ব্যথাও কোলন ক্যানসারের অন্যতম মুখ্য একটি উপসর্গ।
৬। কোলন ক্যানসারে যে হেতু অন্ত্র থেকে রক্তপাত হয় তাই এটি রক্তাল্পতা তৈরি করে। রক্তাল্পতা ডেকে আনে ক্লান্তি।
ঝুঁকি এড়াবেন কী করে?
চিকিৎসকদের মতে, স্বাস্থ্যকর খাবার, নিয়মিত শরীরচর্চা, মদ্যপান ও ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ, রেড মিট খাওয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ, ঠিক সময় অন্যান্য ক্রনিক অসুখের চিকিৎসা, এ সব মূল শারীরিক নিয়মনীতি মেনে চললেই এই অসুখের ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায় অনেকটা। রোজের খাবারে পর্যাপ্ত টাটকা ফলমূল, শাকসব্জি, ভূষি-সহ আটার রুটি, ওট্স, মিলেট বেশি করে খেতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যাওয়ার আগেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।