রোজ ঠান্ডা পানীয় খান? ছবি: সংগৃহীত।
বিরিয়ানির বা তেল মশলা দেওয়া খাবারের সঙ্গে জল খেলেই অম্বল হয়। তাই ঠান্ডা নরম পানীয় খান হামেশাই। অতিরিক্ত পরিমাণে এই ধরনের পানীয় খাওয়া শরীরের জন্য মোটেই ভাল নয়। যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদের জন্য নরম পানীয় বিষের মতোই। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, রোজ নরম পানীয় খেলে লিভার ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি মেয়েদেরই। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র ক্যালোরি এবং শর্করা ছাড়া এই ধরনের ঠান্ডা পানীয়ের কোনও পুষ্টিগুণ নেই। দীর্ঘ দিন ধরে এই পানীয় খাওয়ার অভ্যাস থাকলে পানীয়ের মধ্যে থাকা অতিরিক্ত ক্যালোরি শরীরে মেদের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। বার্মিংহাম অ্যান্ড উইমেন্স হসপিটালের একদল ভারতীয় গবেষক এই বিষয়ে আলোকপাত করেন। রজঃনিবৃত্তি হয়েছে এমন প্রায় এক লক্ষের কাছাকাছি মহিলা এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। যাঁরা রোজই নরম পানীয় খান, তাঁদের লিভারের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৮৫ শতাংশ বেশি।
পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি কেন?
গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, রোজ ঠান্ডা নরম পানীয় খেলে মহিলাদের শরীরে ফাইব্রোসিস, সিরোসিসের মতো লিভারের প্রদাহজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। চিনি দেওয়া সাধারণ মিষ্টি খাবারের সঙ্গে ক্যানসারের সরাসরি কোনও যোগ না থাকলেও স্থূলত্বের সঙ্গে রয়েছে। তা স্তন, অগ্ন্যাশয় এবং যকৃতের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। এ ছ়া়ড়াও বেশ কিছু নরম পানীয়ের মধ্যে বেঞ্জিন এবং মিথাইলিমিডাজ়োলের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিকও রয়েছে। রক্তে বাড়তি শর্করাও ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার জন্য দায়ী।
এ ছাড়া আর কী কী কারণে লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে?
১) জিনগত কারণে যকৃতের ক্যানসার হতে পারে।
২) ওজন বেশি হলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা না করলে বাড়তে পারে এই রোগের আশঙ্কা।
৩) মদ্যপানও ক্ষতি করে যকৃতের।
৪) হেপাটাইটিস বি বা সি-এর জন্য যকৃতে সংক্রমণ ঘটে। জন্ডিসে আক্রান্ত হলেও বাড়তে পারে এই ক্যানসারের আশঙ্কা।
৫) অনেকেরই অভ্যাস, দীর্ঘদিন ধরে আচার বা ওই ধরনের খাবার ফেলে রাখা। একটা সময়ের পরে তাতে ছত্রাকের জন্ম হয়। এই ছত্রাকের মধ্যে থাকে আফলাটক্সিন, যা যকৃতের ক্যানসারের জন্য দায়ী।
লিভার ক্যানসারের লক্ষণগুলি কী কী?
যখন অন্য কোনও অঙ্গে ক্যানসার হয়, তখন সেই অনুযায়ী ছড়াতে পারে এটির উপসর্গ। সাধারণত, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, রক্ত বমি হওয়া, পেটের উপরের দিকে কিছুটা ব্যথা হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। খিদে কমে যাওয়াও এর একটি লক্ষণ হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, এই সব উপসর্গ লিভার সিরোসিসের রোগীদের মধ্যেও দেখা যায়। কিন্তু, ক্যানসার আর সিরোসিসের উপসর্গ এক হলেও এই দু’টি রোগ এক নয়।