Robotic Surgery

দেশের তৈরি প্রথম ‘সার্জিক্যাল’ রোবট এল পুণের হাসপাতালে, যান্ত্রিক হাতেই হবে জটিল অস্ত্রোপচার

যন্ত্রই মানবশরীর কাটাছেঁড়া করে জটিল অস্ত্রোপচার করবে। হার্ট থেকে লিভার, কিডনি বা মূত্রাশয়— শরীরের যে কোনও অঙ্গের অস্ত্রোপচার যন্ত্র দিয়েই করা সম্ভব। আধুনিক এই চিকিৎসা পদ্ধতিকেই বলা হচ্ছে রোবটিক সার্জারি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:১৩
Share:

রোবটিক সার্জারিতে সুবিধা কী কী হবে? ছবি: সংগৃহীত।

অপারেশন কক্ষে না থাকলেও চলবে। দূরে বসেই যন্ত্রের চোখ দিয়ে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ত্রিমাত্রিক প্রতিচ্ছবি দেখতে পাবেন চিকিৎসকেরা। দূর থেকে অনায়াসে নিয়ন্ত্রণ করবেন যান্ত্রিক হাতগুলিকে। আর যন্ত্রই মানবশরীর কাটাছেঁড়া করে জটিল অস্ত্রোপচার করবে। হার্ট থেকে লিভার, কিডনি বা মূত্রাশয়— শরীরের যে কোনও অঙ্গের অস্ত্রোপচার যন্ত্র দিয়েই করা সম্ভব। আধুনিক এই চিকিৎসা পদ্ধতিকেই বলা হচ্ছে রোবটিক সার্জারি। এত দিন বিদেশ থেকে যন্ত্র আনিয়ে অস্ত্রোপচারের কাজ হত। এই প্রথম বার দেশের তৈরি ‘সার্জিক্যাল’ রোবট বসবে পুণের একটি হাসপাতালে।

Advertisement

পুণের ‘নোবেল হসপিটালস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’-এ রোবটিক সিস্টেমটি বসানোর কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে। যন্ত্রটির নাম ‘এসএসআই মন্ত্র’। সম্প্রতি সেটি কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে। যন্ত্রটির পাঁচটি হাত। তাতে থ্রি-ডি ক্যামেরাও বসানো আছে। শরীরের যে অংশে অস্ত্রোপচার হবে, সেই অংশের সুস্পষ্ট ত্রিমাত্রিক ছবি তুলবে ওই ক্যামেরা। অপারেশন কক্ষের বাইরে বসে মনিটরে সেই ছবি ও ভিডিয়ো দেখে অস্ত্রোপচারটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন চিকিৎসকেরা।

আর-পাঁচটা অস্ত্রোপচার থেকে কোথায় আলাদা ‘রোবটিক সার্জারি’?

Advertisement

হাসপাতালের ক্যানসার চিকিৎসক আশিস পোখারকর জানিয়েছেন, ল্যাপারোস্কোপির থেকে আরও এক কদম এগিয়ে এই রোবটিক সার্জারি। অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেও রয়েছে অভিনবত্ব। রোবট হাতের কব্জি ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরাতে পারে, যা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই শরীরের যে কোনও জায়গায় পৌঁছে গিয়ে জটিল অস্ত্রোপচার করা সম্ভব। নিখুঁত ভাবে সেলাই করতেও পারবে রোবট।

ইতিহাস বলছে, ১৯৮৫ সালে নিউরোলজিক্যাল বায়োপ্সি করতে প্রথম রোবটের সাহায্য নেওয়া হয়। এর পরে ২০০০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘দা ভিঞ্চি’ নামে একটি সংস্থা এই রোবট বাজারে আনার পরে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত খুলে যায়। ২০১০ সালে দিল্লির এইমসে প্রথম রোবটিক পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে তখনও দেশে ‘সার্জিক্যাল রোবট’ তৈরি হয়নি। বর্তমানে অবশ্য এর ব্যাপ্তি বেড়েছে অনেকটাই। স্ত্রী-রোগ সংক্রান্ত কোনও অস্ত্রোপচারই হোক কিংবা মাথা-গলা, কিডনি-যকৃৎ-অগ্ন্যাশয়-থাইরয়েড-মূত্রথলি-জরায়ুর অস্ত্রোপচার অথবা অঙ্গ প্রতিস্থাপন— সব ক্ষেত্রেই রোবটের সাহায্য নিচ্ছেন প্রশিক্ষিত চিকিৎসকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, দেশের তৈরি রোবটিক সিস্টেম সফল হলে, অস্ত্রোপচারের খরচ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হবে। আরও বেশি সংখ্যক রোগী রোবটিক সার্জারির সুবিধা নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে হয়তো সরকারি হাসপাতালেও রোবট কেনা যাবে। উপকৃত হবেন অনেকেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement