আর্দ্র পরিবেশ, তাপমাত্রার তারতম্য, যোনির পিএইচ-এ হেরফের— এ সবই ব্যাক্টেরিয়া এবং ফাঙ্গাস তৈরির জন্য আদর্শ। ছবি: সংগৃহীত
বর্ষা মানেই যত রকম উটকো রোগের বাড়বাড়ন্ত। কারও জ্বর-ঠান্ডা লাগা, কারও অ্যাসি়ডিটি-গ্যাস-পেটের গোলমাল, আবার কারও হয়তো সারা শরীরের নানা রকম ব্যথা। মেয়েদের এই সময়ে বাড়তি সমস্যা। কারণ একটুতেই তাঁদের নানা ধরনের স্ত্রীরোগ চেপে ধরে। ঠান্ডা-গরম আবহাওয়া এবং স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে জীবাণু সহজেই বাড়তে পারে। তাই মেয়েদের যোনিতে চট করে নানা রকম সংক্রমণ হয়ে যায় এই মরসুমে।
আর্দ্র পরিবেশ, তাপমাত্রার তারতম্য, যোনির পিএইচ-এ হেরফের— এ সবই ব্যাক্টেরিয়া এবং ফাঙ্গাস তৈরির জন্য আদর্শ। তাই বর্ষায় মেয়েদের ইউরিনারি ট্র্যাক্ট সংক্রমণ, রিপ্রোডাক্টিভ ট্র্যাক্ট সংক্রমণ এবং অন্যান্য স্ত্রীরোগের আশঙ্কা বাড়ে।
সাবধান থাকতে তাই এ সময়ে জল দিয়ে বারবার যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করতে হবে। অন্য কোনও প্রসাধনীর বদলে শুধু জলই ব্যবহার করা শ্রেয়। এবং প্রত্যেক বারই শুকনো করে মুছে ফেলতে হবে। তা হলেই আর ব্যাক্টেরিয়া কিংবা ফাঙ্গাস কোনও ভাবেই জন্মাতে পারবে না।
যতটা পারবেন যোনি শুকনো এবং পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন।
কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে আর বর্ষার সময়ে সে ভাবে সমস্যায় পড়তে হবে না—
১। হালকা সুতির অন্তর্বাস
বর্ষায় কোনও আঁটসাঁট অন্তর্বাস পরবেন না। তার বদলে নরম সুতির কাপড়ের অন্তর্বাস বেছে নিন যাতে ভিজে গেলে তাড়াতা়ড়ি শুকিয়ে যেতে পারে। না হলেই জায়গাটি আর্দ্র হয়ে নানা রকম জীবাণু সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি র্যাশ বেরিয়ে যাওয়ারও ঝুঁকি থাকে।
২। ঋতুস্রাবের সময়ে পরিচ্ছন্নতা
ঋতুস্রাব চলাকালীন একটু ঘন ঘন স্যানিটারি প্যা়ড বা ট্যাম্পন বদলানো প্রয়োজন। যতটা পারবেন যোনি শুকনো এবং পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। যাতে কোনও রকম সংক্রমণ না হয়ে যেতে পারে। সবচেয়ে ভাল হয়, যদি এ সময়ে স্যানিটারি ন্যাপকিনের বদলে মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করতে পারেন। তা হলে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
বর্ষায় আঁটোসাঁটো অন্তর্বাস পরবেন না।
৩। শেভ করবেন না
অনেকে মেয়েই যৌনাঙ্গের অবাঞ্ছিত চুল রেজারের সাহায্যে তুলে ফেলেন। কিন্তু চিকিৎসকরা এই মরসুমে তা নিষেধ করছেন। শেভ করলে ত্বকে নানা রকম সমস্যা হতে পারে। ত্বক অত্যধিক স্পর্শকাতর হয়ে গিয়ে র্যাশ বেরোতে পারে। তাই বর্ষায় এই কাজটি না করাই শ্রেয়।
৪। বেশি করে জলপান
সারা বছরই যে কোনও প্রাপ্তবয়স্কের ২-৩ লিটার জল খাওয়া উচিত প্রত্যেক দিন (যদি না তাঁর অন্য কোনও বিশেষ শারীরিক সমস্যা থাকে)। কিন্তু বর্ষাকালে এ বিষয়ে আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। বর্ষায় শরীর থেকে দ্রুত অনেকটা জল বেরিয়ে যায়। যোনির পিএইচ মাত্রা বজায় রাখার জন্য তাই পরিমাণ মতো জল খাওয়া প্রয়োজন।