ঋতুস্রাব বন্ধই অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার একমাত্র লক্ষণ নয়। ছবি: সংগৃহীত।
কোনও মাসে ঋতুস্রাব না হলে তাকেই অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার লক্ষণ মনে করে থাকেন অধিকাংশ মহিলা। কিন্তু ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াই গর্ভধারণের একমাত্র লক্ষণ নয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ঋতুস্রাব বন্ধ না হওয়া সত্ত্বেও অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন অনেকে। তবে অধিকাংশ মহিলাই এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল নন। অন্তঃসত্ত্বা হলে শুরুর দিনগুলি থেকেই নিজের প্রতি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। দেরিতে বুঝতে পারার কারণে অনেকেরই গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকে। ঋতুস্রাব ছাড়া শরীরে আর কোন কোন পরিবর্তন দেখে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন, তা জেনে নিন।
ঋতুস্রাব বন্ধ না হলেও কী কী লক্ষণ দেখা দিলে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াটা জরুরি?
১) অত্যধিক ক্লান্তি: কোনও কারণ ছাড়াই সারা দিন প্রচণ্ড ক্লান্ত লাগছে? হতে পারে, আপনি অন্তঃসত্ত্বা। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রথম দিকে শরীর অন্য একটি প্রাণ ধারণ করার জন্য তৈরি হতে থাকে। শরীরে হঠাৎ করে ভ্রুণের আগমনের কারণে বেশি করে ক্লান্ত লাগে।
২) রক্তক্ষরণ ও টান ধরা: ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার নির্দিষ্ট দিনের আগে হালকা রক্তক্ষরণ (স্পটিং) বা পেটে টান ধরাও অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার লক্ষণ। ভ্রুণ সঞ্চার হওয়ার প্রথম ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এমনটা হতে পারে। দু-এক ফোঁটা রক্তক্ষরণ দেখে অনেকে ভাবতে পারেন, বুঝি ঋতুস্রাব শুরু হল। তবে এ ক্ষেত্রে রক্তপাত খুব বেশি সময় ধরে হয় না।
৩) স্তনের পরিবর্তন: গর্ভে ভ্রুণ সঞ্চার হলে শরীরে বিভিন্ন হরমোনের পরিবর্তন হতে থাকে। ফলে স্তনও ভারী হয়ে আসতে থাকে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রথম লক্ষণ হল নরম অথচ ভারী স্তন। হঠাৎ করে যদি এমন হয়, তা হলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। অথবা আপনি অন্তঃসত্ত্বা কি না, তা বাড়িতেই পরীক্ষা করে নিন।
৪) বমি বমি ভাব, গন্ধের প্রতি সংবেদনশীলতা: অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রথম কয়েক সপ্তাহ পেটে অস্বস্তি, বমি বমি ভাব খুবই স্বাভাবিক। শরীরে প্রোজেস্টেরন হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে তখন গা গুলিয়ে ওঠে। অন্য দিকে ইস্ট্রোজেন ও এইচসিজি হরমোনের প্রভাবে হালকা গন্ধও খুব তীব্র বলে মনে হয়। মাঝে মাঝেই বমি পায়। এ রকম সমস্যা হলে অতি অবশ্যই অন্তঃসত্ত্বা কি না, তা পরীক্ষা করে নিন।
৫) ঘন ঘন প্রস্রাব: অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রথম ২-৩ সপ্তাহে ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়া খুব স্বাভাবিক। শরীরে নতুন তৈরি হওয়া এইচসিজি হরমোন কিডনিতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। জরায়ু বড় হতে থাকলে গলব্লাডারেও তার চাপ পড়ে। ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব পায়।