চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
চাঙ্গা থাকতে নিয়ম করে শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এই এক দাওয়াইতেই গায়েব হতে পারে হাজারটা রোগ। তবে অফিসের ব্যস্ততা ও সংসারের নানা দায়িত্ব সামলে জিমে যাওয়ার সময় পান না অনেকেই। ইচ্ছে থাকলে বাড়িতে আধ ঘণ্টা সময় বার করে যোগাসন বা ব্যায়াম অভ্যাস করতে পারেন। কেবল রোগা হওয়াই নয়, নানা রকম শারীরিক সমস্যা দূর হতে পারে নিয়ম করে যোগাসন করলে। তবে সঠিক নিয়ম মেনে যোগাসন করলে তবেই মিলবে ফল। পুজোর আগে শরীর চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসন অভ্যাস করতে পারেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। রইল আসন আসান করার পদ্ধতির হদিস। আজকের ব্যায়াম পার্শ্ব সুখাসন।
সুখাসনে বসে পর্যায়ক্রমে ডান ও বাঁ পাশে শরীর হেলিয়ে দেওয়াই এই আসনের মূল বিষয়। সহজসরল একটি আসন। মাটিতে সাধারণ ভাবে বসে আসনটি করা হয়। অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে ক্লান্তি কাটিয়ে শরীর ও মনকে পুনরুজ্জীবিত করতে এই আসন বেশ উপকারী।
কী ভাবে করবেন?
• ম্যাটের উপর সোজা হয়ে পা মুড়ে সুখাসনে বসুন। শিরদাঁড়া টান টান রেখে ঘাড় ও মাথা সোজা করে দুই চোখ বন্ধ করুন। এই অবস্থানে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। এই ভঙ্গিতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে চোখ খুলুন।
• এ বার ডান হাত মাটিতে রাখুন নিতম্বের সোজাসুজি, একটু দূরে। তার পর শ্বাস নিতে নিতে বাঁ হাত কানের পাশ দিয়ে মাথার উপরে তুলুন।
• হাত ও নিতম্ব মাটিতে দৃঢ় ভাবে রেখে কোমর থেকে ডান দিকে ঝুঁকে যান। খেয়াল রাখবেন, ঘাড় বা মাথায় যেন অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। এই অবস্থানে কিছু ক্ষণ থাকুন ও স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। জোর করে বেশি হেলবেন বা ঝুঁকবেন না। এর ফলে শরীরে বাড়তি চাপ পড়তে পারে।
• এ বারে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে বাঁ হাত মাথার উপর থেকে নীচে নামিয়ে বাঁ দিকের নিতম্বের পাশে মাটিতে রাখুন।
• ডান দিকের মতো করে বাঁ দিকেও অভ্যাস করুন। এতে এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। এই ভাবে তিন রাউন্ড অভ্যাস করুন।
• হাত ওঠানো-নামানোর সময়ে কোমরের নীচের দিকে টান বা স্ট্রেচ অনুভব করবেন, এটাই আসনটির বৈশিষ্ট্য।
সতর্কতা
রক্তচাপ অত্যন্ত কম হলে, মাথা ঘোরার সমস্যা থাকলে ও হাঁটুতে ব্যথা থাকলে মাটিতে পা মুড়ে বসে আসনটি অভ্যাস করবেন না। বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে চেয়ারে বসে আসন অভ্যাস করলে একই উপকার পাবেন।
কেন করবেন?
এই আসনটি ঘাড়, কাঁধ, কোমর ও নিতম্বকে টান টান রেখে এক অত্যন্ত আরামদায়ক অনুভুতি দেয়। ডান ও বাঁ দিকে হেলে আসনটি করার ফলে বুকের পাঁজরের ছোট ছোট পেশিগুলি উজ্জীবিত হয়ে আরামদায়ক অনুভুতি অনুভব করতে পারেন। কোমর বাঁকানো হয় বলে সেখানকার বাড়তি মেদ কমে কোমর সুগঠিত হয়। একই সঙ্গে পাশে শরীর বাঁকানো আসন করার ফলে পেটের পেশি দৃঢ় হয় এবং বিপাকহার বাড়ে ও হজম সংক্রান্ত সমস্যা দূর হয়। বিপাকহার বৃদ্ধি হয় বলে বাড়তি মেদ জমতে পারে না।