তেল, ঘি না মাখন কার পাল্লা ভারী? ছবি- সংগৃহীত
শরীরের কোনও সমস্যা হলেই প্রথম কোপটি পড়ে খাবারের উপর। চিকিৎসক, বন্ধু থেকে প্রবাসী আত্মীয় সকলের একটাই নিদান— বেশি তেল-মশলা খাওয়া যাবে না। আর সমস্যা যদি হয় হৃদ্যন্ত্রের, তা হলে তো কথাই নেই। এমনিতে রোজের রান্নায় আমরা সর্ষের তেল বা সাদা তেল ব্যবহার করলেও মাঝেমধ্যে নিয়ম ভেঙে ঘি বা মাখন খেয়েই থাকি। অনেকেই মনে করেন, প্রতি দিন রগরগে তেলমশলা খাওয়ার চেয়ে এক-আধটা দিন ঘি বা মাখন খাওয়া ভাল। চিকিৎসকদের মতে, উদ্ভিজ্জ যে কোনও তেলই হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।
তা হলে ঘি বা মাখন কি ব্রাত্য?
ঘি হল আনপ্রসেসড্ ফ্যাট। খাঁটি গরুর ঘিতে আছে ওমেগা থ্রি এবং ভিটামিন এ। ১০০ গ্রাম ঘি থেকে প্রায় ৯০০ ক্যালোরি শক্তি উৎপন্ন হয়। এ ছাড়াও ঘিয়ে ৬০ শতাংশ স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকলেও ট্রান্স ফ্যাট নেই।
অন্য দিকে, ১০০ গ্রাম মাখন থেকে পাওয়া যায় ৭১৭ ক্যালোরি, ৫১ শতাংশ স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ৩ গ্রাম ট্রান্স ফ্যাট।
তাই তুলনায় মাখনের চেয়ে ঘিয়ের পাল্লা একটু হলেও বেশি।
অলিভ অয়েলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ছবি- সংগৃহীত
তবে, সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে নতুন একটি তথ্য। সেখানে বলা হচ্ছে ঘি বা মাখন নয়, হৃদয়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এবং সেই সংক্রান্ত ঝুঁকি এড়াতে একমাত্র অলিভ অয়েল ব্যবহার করাই ভাল। কারণ অলিভ অয়েলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, নিয়মিত খেলে যা শুধু হার্টই নয়, ক্যানসার, ডায়াবিটিস এবং অ্যালজাইমার্সের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমাতে পারে। এ ছাড়াও অলিভ অয়েলে ‘গুড ফ্যাটে’র পরিমাণ অনেকটাই বেশি, যা রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।
বাঙালির তো আবার ভাজাভুজি ছাড়া কোনও খাবারই সম্পূর্ণ হয় না। কোনও কিছু ভাজার ক্ষেত্রে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে একেবারেই নিষেধ করা হয়েছে। তাই অলিভ অয়েল খাচ্ছেন ভেবে মনের সুখে তেলেভাজা খাবেন, সেটি কিন্তু হচ্ছে না।
তবে, সকলের স্বাদ এবং সাধ্য এক রকম নয়। তাই রান্নার কাজে যে তেলই ব্যবহার করুন না কেন, কয়েকটি জিনিস অবশ্যই মেনে চলবেন।
১) এক বার রান্না করার পর তেলের রং যদি কালো হয়ে যায় বা তেল ঘন হয়ে যায়, সেই তেল ব্যবহার করা যাবে না।
২) রান্না করার সময় তেল অতিরিক্ত গরম করবেন না।
৩) একবারে অনেকটা তেল কিনে মজুত করে রাখবেন না।
৪) সরাসরি সূর্যের আলো আসে এমন জায়গায় তেল রাখা যাবে না।