বয়স ২৫ পেরোলেই নিয়মিত করাতে হবে ডায়াবিটিস পরীক্ষা। ছবি- সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডায়াবিটিস ফেডারেশনের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, বর্তমানে গোটা বিশ্বে ডায়াবিটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫৪ কোটি। ডায়াবিটিস এমন একটি রোগ, যা অধিকাংশ সময় হানা দেয় রোগীর অজান্তেই। যখন ধরা পড়ে তখন ক্ষতি হয়ে যায় অনেকটা। পাশাপাশি ডায়াবিটিস একা আসে না, ডেকে আনে আরও নানা রকমের সমস্যা। দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস এই রোগ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই যত তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় করা যায় তত সুবিধা হয় চিকিৎসায়। কিন্তু ডায়াবিটিস রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে কোন বয়স থেকে? এত দিন মনে করা হত, ৪৫ বছর বয়স হয়ে গেলেই উপসর্গ থাক বা না থাক, প্রতি তিন বছর অন্তর ডায়াবিটিস পরীক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু এখন আর ৪০ পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আমেরিকান ডায়াবিটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, তিন দশক আগেও শিশু ও তরুণ-তরুণীদের দেহে এই রোগ ছিল অত্যন্ত বিরল। কিন্তু গত তিন দশকে এই ছবি বদলে গিয়েছে।
শর্করার মাত্রা ৫৩ মিলিমোল/মোল থাকলে চোখের সমস্যা ও কিডনিজনিত রোগের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম। ছবি-প্রতীকী
অপেক্ষাকৃত কম বয়সেও দেখা দিচ্ছে ডায়াবিটিস। তাই এখন আর ৪৫ পর্যন্ত অপেক্ষা করা চলবে না। বয়স ২৫ পেরোলেই নিয়মিত করাতে হবে ডায়াবিটিস পরীক্ষা। চিকিৎসকদের মতে প্রতি ছ’ মাস অন্তর এইচবিএওয়ানসি পরীক্ষা করিয়ে দেখা যেতে পারে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আছে কি না।রক্তে শর্করার মাত্রা কত থাকলে ডায়াবিটিস এবং তাঁর হাত ধরে একাধিক রোগের ঝুঁকি কমবে?
সম্প্রতি সুইডেনের একদল গবেষকের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, এইচবিএওয়ানসি পরীক্ষায় রক্তের শর্করার মাত্রা সাত শতাংশের নীচে থাকলে দীর্ঘমেয়াদি একাধিক রোগের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। গবেষকরা দাবি করেছেন রক্তের শর্করার মাত্রা ৫৩ মিলিমোল/মোল থাকলে চোখের সমস্যা ও কিডনিজনিত রোগের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম। টাইপ-১ ডায়াবিটিসে আক্রাম্ত রোগীদের উপর ৩০ বছর ধরে গবেষণা চালানোর পর গবেষকরা এই রিপোর্টি বানিয়েছেন। গবেষকরা জানিয়েছেন, সুস্থ ব্যক্তির এইচবিএওয়ানসি রিপোর্টে রক্তের শর্করার মাত্রা থাকে ছয় শতাংশ। কোনও ব্যক্তি যদি টাইপ-১ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হন এবং তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা যদি ৭ শতাংশের মধ্যে থাকে তাহলে নানা শারীরিক জটিলতার ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব! এইচবিএওয়ানসি রিপোর্টে রক্তের শর্করার মাত্রা ৭ শতাংশের বেশি হলেই রক্তবাহগুলির ক্ষতি হতে শুরু করে। এর প্রভাব পড়ে স্নায়ুর উপরেও। মূলত চোখ ও কিডনির উপর প্রভাব পড়ে মারাত্মক।