ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনে এখনও পর্যন্ত ৩৭ ধরনের মিউটেশন দেখা গিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
দক্ষিণ আফ্রিকার এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ফাইজারের প্রতিষেধক খানিক দমে যাচ্ছে কোভিড-১৯’এর ওমিক্রন রূপের কাছে। যদিও পাশাপাশি এ-ও দেখা গিয়ছে, ‘বুস্টার’ বা বাড়তি টিকা নেওয়া থাকলে ওমিক্রনের রেশ বেশ কিছুটা কমিয়ে দিচ্ছে ফাইজারের প্রতিষেধক। সম্প্রতি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন দাবি করেছে, তাদের নতুন অ্যান্টিবডি নির্ভর চিকিৎসার পদ্ধতি ওমিক্রনের যাবতীয় মিউটেশনের সঙ্গে লড়তে সক্ষম হয়েছে।
ব্রিটেনের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা গ্ল্যাক্সো ৭ ডিসেম্বর জানিয়েছে, ঝুটো ভাইরাসের বিরুদ্ধ ইন-ভার্ট্রো পরীক্ষায় ওমিক্রনের মতো এক সিনথেটিক রূপ তৈরি করা হয় সোট্রোভেম্যাব-এ (নতুন অ্যান্টিবডি ট্রিটমেন্ট)। শুধু মূল মিউটেশন নয়, ওমিক্রমের স্পাইক প্রোটিনে যে ৩৭ ধরনের মিউটেশন হতে দেখা গিয়েছে, গ্ল্যাক্সো’র চিকিৎসা পদ্ধতি, তার প্রতিটার সঙ্গেই লড়তে পেরেছে। এখনও পর্যন্ত এই ৩৭ ধরনের মিউটেশনের কথা জানা গিয়েছে ওমিক্রনে।
ওমিক্রন রূপ ধরা পড়ার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে হইচই পড়ে যায়। এখনও পর্যন্ত করোনার যে সব প্রতিষেধক বা ওষুধ বাজারে স্বীকৃতি পেয়েছে, সেগুলি কোনটা এই নতুর রূপের ক্ষেত্রে কত কার্যকর, তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা। যেহেতু ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনের এত ধরনের মিউটেশন ধরা পড়েছে, তাই উদ্বেগের যথেষ্ট জায়গা তৈরি হয়েছে। কারণ, বেশির ভাগ চিকিৎসার পদ্ধতি এই স্পাইক প্রোটিন মিউটেশন আটকানোর উপরই দাঁড়িয়ে রয়েছে।
করোনা চিকিৎসায় অন্যতম অ্যান্টিবডি ট্রেটমেন্ট। ছবি: সংগৃহীত
গ্ল্যাক্সোর তরফে জর্জ স্ক্যাঙ্গোস বলেছেন, ‘‘পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে আমাদের চিকিৎসায় ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিন মিউটেশনের নিষ্ক্রিয়করণ বেড়েছে অন্তত তিনগুন। তাই তাড়াতা়ড়ি ওমিক্রন ধরা পড়লে সোট্রোভেম্যাব যে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে ভাইরাসের প্রকোপ অনেকটাই কমাতে পারবে, তা নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’’
৭৯ শতাংশ পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে সোট্রোভেম্যাব ব্রিটেনের করোনা রোগীদের মধ্যে মৃত্যু বা হাসপাতালে ভর্তি করানোর মতো পরিস্থিতির হার কমিয়েছে। তবে প্রত্যেকেরই করোনার মৃদু থেকে মাঝারি উপসর্গ ছিল।
শরীরে অ্যান্টিবডি ইনজেক্ট করা বহু চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম। রয়েছে আরও কিছু চিকিৎসার উপায়। তবুও যাঁদের ইমিউনো-ডেফিসিয়্যান্সি রয়েছে, তাঁদের মধ্যে করোনার প্রভাব বেশি গুরুতর হয়ে ওঠা আটকাকে এই পদ্ধতি যথেষ্ট কার্যকর। যাঁদের প্রথম থেকেই অন্য কোনও দীর্ঘ অসুস্থতা রয়েছে, তাঁদের শরীরে করোনার প্রভাব কমাতেও কার্যকর হতে পারে অ্যান্টিবডি ট্রিটমেন্ট। তবে গ্ল্যাক্সোর সোট্রোভেম্যাবের সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মত, এখনও এই নিয়ে আরও পরীক্ষা করা প্রয়োজন। বিশেষ করে ওষুধের পরিমাণ বাড়ালে শরীর কী রকম প্রক্রিয়া হতে পারে, তা এখনও দেখার বিষয়।