রক্তাল্পতার দাওয়াই রয়েছে হাতের কাছেই। ছবি: শাটারস্টক।
খাওয়াদাওয়ায় পুষ্টিগুণের ভারসাম্য ঠিকঠাক না থাকার কারণে শরীরে আয়রনের অভাব ইদানীং একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকের শরীরেই আয়রনের অভাব নানা অসুখও ডেকে আনছে। বিশেষ করে মহিলারাই বেশি এই সমস্যায় ভুগছেন। আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তাল্পতার মতো সমস্যাও দেখা যায়। শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলে লোহিত কণিকার উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। আয়রনের অভাবে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন না থাকলে সারা শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হয়। শুধু তা-ই নয়, যাঁরা সন্তানধারণ করেছেন বা যাঁদের ঋতুস্রাবের সময় বেশি মাত্রায় রক্তপাত হয়, তাঁদের জন্য আয়রনের ঘাটতি কিছু ক্ষেত্রে প্রাণসংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সাধারণ খাবারের সঙ্গে প্রতি দিন পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন শরীরে না পৌঁছলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতেই হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার যদি খুব অবনতি না হয়, সে ক্ষেত্রে আয়রনের ঘাটতি মেটাতে প্রাথমিক ভাবে খাবারের উপর ভরসা করে দেখা যেতেই পারে। জেনে নিন কোন কোন খাবার খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দূর হবে।
১) বিট-গাজর: রোজ খাবারে স্যালাড হিসাবে বিট-গাজর বেশি করে খেতে হবে। না হলে এই দু’টি সব্জিকে একসঙ্গে ব্লেন্ডারে মিশিয়ে ছেঁকে নিয়ে শুধু রসও খেতে পারেন। এই রসে মিশিয়ে নিতে পারেন লেবুর রস। শরীরে আয়রন শোষণ করতে ভিটামিন সি-র যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
২) সজনে পাতা: সজনে ডাঁটা খেতে ভালবাসেন অনেকেই। কিন্তু সজনে গাছের পাতার যে এত গুণ আছে, তা কি জানতেন? ভিটামিন এ, সি এবং ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর এই পাতাটি প্রতি দিন সকালে খালি পেটে খেলে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়। এ ছাড়াও, তারুণ্য ধরে রাখতে সজনে পাতার জুড়ি মেলা ভার।
শরীরে আয়রনের অভাবে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। ছবি: সংগৃহীত।
৩) খেজুর, কিশমিশ: যদি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে, তা হলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১০-১২টি কিশমিশ এবং কয়েকটি খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। রক্তে আয়রনের ঘাটতি মেটাতে পারে ভিটামিন এ, সি, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, আয়রনে সমৃদ্ধ কিশমিশ এবং খেজুরের যুগলবন্দি।
৪) পালং: প্রোটিন, ভিটামিন এ, সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর পালং শাক রোজ নিয়ম করে খেতেই পারেন। ১০০ গ্রাম পালং-এ আছে ২.৭ মিলিগ্রাম আয়রন। পালং শাকের ঘন্ট, পালং রুটি, পালক স্মুদি নানা ভাবে ডায়েটে রাখতে পারেন এই শাক
৫) কালো এবং সাদা তিল: অনেকেই রান্নায় তিল ব্যবহার করে থাকেন। আয়রন, কপার, জ়িঙ্ক, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন বি৬, ফোলেট এবং ই সমৃদ্ধ তিল আয়রনের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে বিশেষ ভাবে সহায়ক। রান্নায় তিল বাটা ব্যবহার করতে পারেন। স্যালাডে ভাজা তিল দিয়েও খেতে পারেন। গুড় দিয়ে তিলের লাড্ডুও খাওয়া যেতে পারে।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। ডায়েটে কোনও রকম বদল আনার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।