সুস্থ থাকতে বদলান জীবনধারা। ছবি:সংগৃহীত।
সুস্থ থাকার পথ অনেক। তবু কোন পথে হাঁটলে দীর্ঘ দিন রোগমুক্ত থাকা যায়, তা খুঁজে বার করা মুশকিল। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় খানিক আশার আলো দেখা গিয়েছে। ‘মেয়ো ক্লিনিক প্রোসিডিংস’-এ প্রকাশিত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা জানাচ্ছে, ‘মেডিটেরানিয়ান’ জীবনযাত্রায় যদি নিজেকে অভ্যস্ত করা যায়, তা হলে ভাল থাকা সম্ভব।
কেমন সেই জীবনধারা?
মাছ, মাংস, ডিমের বদলে নিয়ম করে খেতে হবে উদ্ভিদজাত খাবার, শরীরচর্চা হবে ধারাবাহিক, উদ্বেগ এবং অবসাদ থেকে দূরে থাকতে হবে এবং সামাজিক মাধ্যমে বেশি সক্রিয় থাকা যাবে না। মেডিটেরানিয়ান জীবনযাত্রার সংজ্ঞা এটাই। এই ধরনের জীবনযাত্রার অভ্যাস করতে হলে শাকসব্জি, ফলমূল, বিভিন্ন ধরনের শস্য বেশি করে খেতে হবে, নুন এবং চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে, ব্যায়াম এবং যোগাসনের অভ্যাস বজায় রাখতে হবে, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং একই সঙ্গে পারস্পরিক সংযোগ গড়ে তুলতে হবে। তেমনটাই জানাচ্ছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তাঁদের মতে, এই ধরনের জীবনধারা অকালমৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। ইদানীং কম বয়সেই নানা ধরনের রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। হৃদ্রোগ থেকে ক্যানসার— অল্প বয়সেই নানা কঠিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বয়স কম মানেই মৃত্যুর ঝুঁকি কম, তা নয়। অন্তত গত কয়েক বছরে গোটা পৃথিবীতে মৃত্যুর হারের পরিসংখ্যান সে কথাই বলছে। তবে গবেষকদের দাবি, এই মেডিটেরানিয়ান জীবনযাত্রা অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি কমায় প্রায় ২৯ শতাংশ।
প্রায় ১ লক্ষ মানুষের উপর এই গবেষণাটি চালানো হয়েছিল। ন’বছর ধরে চলেছিল গবেষণাটি। গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রত্যেকেই এই ধরনের জীবনযাত্রার অভ্যাস করেছিলেন। গবেষণা শেষে দেখা গিয়েছে, বয়স বাড়লেও সকলেই শারীরিক ভাবে যথেষ্ট সুস্থ এবং ফিট। সেই অর্থে বড় কোনও শারীরিক জটিলতাও কারও নেই। ইতিবাচক ফলাফল দেখেই গবেষকরা এ ধরনের জীবনযাত্রায় সিলমোহর দিয়েছেন।
তবে এই ধরনের জীবনধারায় অভ্যস্ত হওয়ার আগে কয়েকটি বিধিনিষেধ মেনে চলা জরুরি। ডায়েট করার কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলে হঠাৎ জীবনযাপন বদলে না ফেলাই ভাল। মেডেটেরানিয়ান যাপনে প্রবেশ করার আগে কোনও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সকলের শরীরের অন্দরের গঠন একই রকম নয়। ফলে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেয়ে পুষ্টিবিদের উপর বিষয়টি ছেড়ে দেওয়াই শ্রেয়।