বিরল রোগ থেকে মুক্তি। —ফাইল ছবি
মূত্রনালী দিয়ে বেরিয়ে আসত মল। যন্ত্রণায় ছটফট করতেন যুবক। বিরল ফিসচুলার হাত থেকে তাঁকে বাঁচালেন চিকিৎসকরা।
জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা অমল ধর. বয়স ২২ বছর। জানা গিয়েছে, জন্ম থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। তাঁর জন্মের পর চিকিৎসকরা দেখেন, মল নিষ্কাশনের জন্য তাঁর শরীরে কোনও নালী বা ছিদ্র নেই। চিকিৎসকরাই অস্ত্রোপচার করে একটি পায়ুপথ তৈরি করে দিয়েছিলেন।
যুবক জানিয়েছেন, প্রথম প্রথম কোনও অসুবিধা হত না তাঁর। গোলমাল শুরু হয় ১৫ বছর বয়স থেকে। তিনি লক্ষ্য করেন, মূত্রত্যাগের সময় দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। মা-বাবা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান ছেলেকে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, ছেলেটির পায়ুপথ থেকে মূত্রনালী পর্যন্ত আর একটি নালী তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেখান দিয়ে বেরিয়ে আসছে মল।
যত দিন গিয়েছে, অমলের সমস্যা তত বেড়েছে। মূত্রনালী দিয়ে মলত্যাগের সময় তাঁর অসহ্য যন্ত্রণা হত বলেও জানিয়েছেন তিনি। কারণ, এর ফলে মূত্রনালীতে সংক্রমণ হয়ে গিয়েছিল। সপ্তাহে অন্তত দু’বার যুবকের মূত্রনালী দিয়ে বেশ কিছুটা মল নিষ্কাশিত হত। চিকিৎসার জন্য বার বার হাসপাতালে ভর্তি হতেন তিনি। কিন্তু এই সমস্যার কোনও স্থায়ী সমাধান করতে পারছিলেন না চিকিৎসকরাও।
দেশের নানা জায়গায় চিকিৎসার জন্য ঘুরেছেন অমল এবং তাঁর বাবা-মা। অবশেষে পুণের চিকিৎসক অশ্বীন পোরওয়ালের সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হয় অমলের চিকিৎসা। জানা গিয়েছে, ওই যুবক যে রোগে আক্রান্ত, তা অতি বিরল। এখনও পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে মাত্র আট জনের এই রোগ হয়েছে। আগের রোগীরা সকলেই ছিল শিশু। এই প্রথম কোনও প্রাপ্তবয়স্ক যুবকের দেহে এই রোগ দেখা গেল, জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
অমলের প্রথম অস্ত্রোপচার হয় গত বছর ডিসেম্বরে। তার পর আরও চারটি অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে তাঁর দেহে। যুবক ও তাঁর পরিবারের মানসিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে নিয়মিত তাঁদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। মাস পাঁচেক আগে অবশেষে যুবককে রোগমুক্ত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। দিনটি ছিল তাঁর জন্মদিন। সংবাদমাধ্যমে যুবক জানান, একাদশ শ্রেণিতে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। আবার নতুন করে সব কিছু শুরু করার কথা ভাবছেন তিনি।