আমেরিকার মিসিসিপির বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের নিকোলাস ক্রাফ্ট। ছবি: ফেসবুক।
একটা সময় দেহের ওজন হয়ে গিয়েছিল প্রায় ৩০০ কেজি! চিকিৎসকেরা কড়া বার্তা দিয়েছিলেন, ‘‘আপনি জলজ্যান্ত টাইম বোমা! ওজন না কমালে ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে আপনার মৃত্যু অনিবার্য।’’ এর পরের চার বছরে ১৬৫ কেজি ওজন কমিয়ে নজির তৈরি করলেন আমেরিকার মিসিসিপির বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের নিকোলাস ক্রাফ্ট।
আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিকোলাস জানিয়েছেন, ছোট থেকেই তিনি তাঁর স্থূলকায় চেহারা নিয়ে চিন্তিত। স্কুলে পড়ার সময় ওজন ছিল ১৩৬ কেজি। তখন থেকেই মানসিক অবসাদ তাঁকে গ্রাস করতে শুরু করে। তৈরি হয় অত্যধিক খাবার খাওয়ার প্রবণতা। তিনি জানান, তাঁর স্থূলকায়তা শরীরে একাধিক জটিলতার জন্ম দেয়। এর পরেই বাধ্য হয়ে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া শুরু করেন। ২০১৯ সাল থেকে শুরু হয় তাঁর ওজন কমানোর যাত্রা। প্রথম মাসেই তিনি ১৮ কেজি ওজন কমান। নিকোলাস ওই সাক্ষাৎকারে আরও জানিয়েছেন, চিকিৎসকের কড়া নির্দেশ তাঁকে কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলেছিল। কিন্তু তিনি শুধুই বাঁচতে চেয়েছিলেন। স্বাভাবিক ভাবে জীবনকে উপভোগ করতে চেয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “আমি আলাদা করে ওজন কমানোর জন্য কোনও ডায়েট অনুসরণ করিনি। মূলত, খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনি। বাইরের খাবার সম্পূর্ণ ভাবে বাদ দিয়ে ক্যালোরি বুঝে খাবার খেতে শুরু করি। প্রথম দিকে আমি দৈনিক ক্যালোরি নিতাম ১২০০ থেকে ১৫০০ কিলো।”
নিকোলাস তাঁর ওজন কমানোর যাত্রায় নিজের ঠাকুমার কথা উল্লেখ করেন, যিনি তাঁকে বরাবরই উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন। নিকোলাস বলেন, “আমি ঠাকুমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, ওজন কমাব। যাতে আমি তাঁকে আরও বেশি দিন বেঁচে থাকতে দেখতে পারি।” যদিও নিকোলাসের ঠাকুমা নিকোলাসের এই ওজন কমানোর যাত্রা সম্পূর্ণ দেখে যেতে পারেননি। কিছু দিন পরেই তাঁর মৃত্যু হয়। এটাই নিকোলাসের আক্ষেপ। বর্তমানে নিকোলাস অনেকটাই সুস্থ এবং স্বাভাবিক। তাঁর শারীরিক জটিলতাও অনেকাটা কমে গিয়েছে।