জিমে না গিয়েও কী ভাবে ফিট থাকবেন? ছবি: শাটারস্টক।
শরীরচর্চা মানেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দৌড়াদৌড়ি করতে হবে বা জিমে গিয়ে ভারী ওজন তুলতে হবে, এমনটা কিন্তু নয়। এগুলির কোনওটি না করেও শরীর সচল এবং নমনীয় রাখা যায়। তার অন্যতম উপায় হল স্ট্রেচিং। স্ট্রেচিং রকমভেদ অনেক। তাই স্ট্রেচ করার আগে জেনে নিতে হবে কোনটি আপনার জন্য উপকারী। অনেকে ভাবেন স্ট্রেচিং করলেই ওজন কমানো যায় না। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি করতে, পেশি মজবুত করতে স্ট্রেচিংয়ের বিকল্প নেই। এই ব্যায়াম শরীর হালকা করে। পেশি টোনড হয়। অনেক সময়ে আমাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে, অলস লাগে। সেই মুহূর্তে কয়েকটি স্ট্রেচিং করে নিলেই চনমনে লাগবে শরীর-মন। টানা বসে কাজ করতে হয় যাঁদের, তাঁরা কাজের মাঝে এক বার স্ট্রেচিং করে নিলে ঘাড়ব্যথা, কোমরব্যথার হাত থেকে যেমন বাঁচবেন, কাজের চাপও সামলাতে পারবেন সহজে৷
স্ট্রেচিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, ছ’সাত বছরের বাচ্চা থেকে অনেক বয়স পর্যন্ত সকলেই এগুলি করতে পারেন। স্ট্রেচিংয়ের আরও একটি সুবিধা, এটি বাড়িতেই করা যায়। তবে প্রথম দিকে কোনও বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিলে ভাল। কারণ, স্ট্রেচিংয়ে শরীরের ভঙ্গি ঠিক হওয়া অত্যন্ত জরুরি। না হলে চোট-আঘাত লাগার ঝুঁকি রয়েছে, তা ছাড়া ভঙ্গি ঠিক না হলে স্ট্রেচিং করেও কোনও লাভ হয় না।
টানা বসে কাজ করতে হয় যাঁদের, তাঁরা কাজের মাঝে এক বার করে নিলে ঘাড় ব্যথা, কোমর ব্যথার মতো সমস্যার হাত থেকে বাঁচবেন। ছবি: সংগৃহীত।
কোন ধরনের স্ট্রেচিং করবেন, কী ভাবে করবেন?
১। আর্ম সার্কেল: প্রথমে ঘড়ির কাঁটার দিকে ও পরে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে কাঁধের কাছ থেকে ১০ বার করে এক একটা হাত উপরে থেকে নীচের দিকে ঘোরান।
২। শোল্ডার সার্কেল: শিঁড়দাড়া সোজা করে দাঁড়িয়ে কাঁধকে ১০ বার ঘড়ির কাঁটার দিকে ও ১০ বার ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘোরান।
৩। রোটেশনাল নেক এক্সারসাইজ: সোজা দাঁড়িয়ে মাথা ডান দিকে থেকে বাঁ দিকে ঘুরিয়ে আনুন ১০ বার৷ মাথা সোজা করুন। এ বার বাঁ দিক থেকে ডান দিকে ১০ বার৷ এ বার মাথা পিছনে কিকে হেলিয়ে দিন যথাসম্ভব। তার পরে সামনের দিকে ঝোঁকান। এটাও ১০ বার৷
বেন্ডিং: সোজা হয়ে দাড়িয়ে সাইড বেন্ডিং, ব্যাক বেন্ডিং ও ফ্রন্ট বেন্ডিং করুন ১০ বার করে।
ফোল্ডিং: এ বার শুয়ে পড়ুন৷ একটা করে পা ভাঁজ করে বুকের কাছে এনে ১০-২০ সেকেন্ড চেপে ধরে রাখুন। তার পরে দু’পা একসঙ্গে করুন। তিনটে মিলে একটা সেট। পুরো সেটটি তিন থেকে পাঁচ বার করুন।
যতই কাজ থাক, সকালে ১০ মিনিট ও কাজের শেষে বিকেলে ১০ মিনিট এই সব স্ট্রেচিং করুন। টানা বসে কাজ করতে হয় যাঁদের, তাঁরা কাজের মাঝে এক বার করে নিলে ঘাড় ব্যথা, কোমর ব্যথার মতো সমস্যার হাত থেকে বাঁচবেন। কাজের চাপও সামলাতে পারবেন সহজে। তবে শুরু করার আগে এক বার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেবেন। কারণ, কোনও ব্যথা-বেদনা বা সমস্যা থাকলে অতিরিক্ত স্ট্রেচিংয়ে তা বেড়ে যেতে পারে।