তিন মারাত্মক রোগ একসঙ্গে!
করোনাভাইরাসের প্রকোপ এখনও জারি বিশ্ব জুড়ে। এর মধ্যেই জু়ড়েছে মাঙ্কিপক্সের আতঙ্ক। জোড়া ভাইরাসের দাপাদাপিতে উদ্বেগের আবহ বিশ্বের নানা প্রান্তে। এই প্রেক্ষাপটে এ বার একসঙ্গে কোভিড, মাঙ্কিপক্স এবং এইচআইভি ভাইরাসে সংক্রমিত হলেন এক ব্যক্তি। এই প্রথম এ ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে এল।
৩৬ বছর বয়সি এক জন ইতালীয় পুরুষ স্পেন থেকে ভ্রমণ সেরে ফিরে আসার পর তার শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। বাড়ি ফেরার নয় দিন পর মাথা ধরা, গলাব্যথা, জ্বর ও অসম্ভব ক্লান্তিতে কাবু হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
তিনি নিজেই জানান, জুনের ১৬ থেকে ২০ তারিখ স্পেনে থাকাকালীন তিনি অন্য পুরুষের সঙ্গে অসুরক্ষিত যৌনমিলনে লিপ্ত হয়েছিলেন। রিপোর্ট দেখে জানা যায়, ২ জুলাই তাঁর কোভিড হয়। সেই দিনেই দুপুরবেলা তার বাঁ হাত জুড়ে র্যাশ বেরোতে থাকে। পরের দিন তাঁর সারা শরীরে ফোসকা পড়ে। ৫ জুলাই ওই ব্যক্তি লক্ষ্য করেন, তাঁর পিঠ, পা, ঘাড়ে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। সময় নষ্ট না করেই ওই ব্যক্তি ইতালির এক হাসপাতালের ইমারজেন্সি শাখায় ভর্তি হন। পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা জানান, তিনি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন।
হাসপাতালে ভর্তির সময় তাঁর রক্ত পরীক্ষা করা হয়, সেখানে ধরা পড়ে এইচআইভি ভাইরাসও থাবা বসিয়েছে তাঁর শরীরে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ব্যক্তি নিজের এইচআইভি পরীক্ষা করান, তখন ফলাফল নেতিবাচক আসে।
কোভিড ও মাঙ্কিপক্স থেকে সেরে ওঠার পর ১১ জুলাই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা ওই ব্যক্তিকে বাড়িতে কয়েক দিন নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দেন।
প্রতীকী ছবি
ক্যাটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই ব্যক্তির কেস রিপোর্ট নিয়ে গবেষণা চালানো হচ্ছে। মাঙ্কিপক্স ও কোভিড ভাইরাস একসঙ্গে শরীরে বাসা বাঁধলে তা শরীরের উপর কী ভাবে প্রভাব ফেলছে, তা-ই পরীক্ষা করে দেখতে চাইছেন গবেষকরা।
করোনা অতিমারি পরিস্থিতি সামান্য থিতু হলেও এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাইরাসের উপপ্রজাতির সংক্রমণ ঘটছে। তার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা কোথাও কোথাও আবারও বাড়ছে। যদিও প্রতিষেধক প্রয়োগের ফলে মৃত্যুর হার অনেকটাই কমেছে, বলে ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের। অন্য দিকে, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ নিয়ে গোটা বিশ্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।