পুষ্টিবিদদের কাছে গোলাপের চায়ের বিশেষ কদর রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
প্রেম ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই গোলাপ ফুলের সঙ্গে আড়ি। ভুল করেও কাউকে গোলাপ ফুল দেন না, কেউ দিলেও নিতে চান না। এমনকি গোলাপ ফুলের যোগ রয়েছে, এমন খাবারও এড়িয়ে চলেন।
কিন্তু এক বন্ধুর কাছে শুনেছেন গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে তৈরি চা খেলে মেদ ঝরে। ব্যস, সে দিনই তপস্যাভঙ্গ হয়ে গিয়েছে। গোলাপের নির্যাস বা শুকনো পাপড়ি দিয়ে তৈরি চায়ে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় নানা রকম ভিটামিনও রয়েছে। তাই পুষ্টিবিদদের কাছেও এই পানীয়ের কদর রয়েছে। কিন্তু গোলাপের চা খেলে কি সত্যিই মেদ ঝরে?
যদিও মেদ ঝরানো এবং রোজ় টি নিয়ে খুব বেশি গবেষণা নেই। তবে ২০১৫ সালে ‘বায়োমেডিসিন অ্যান্ড ফার্মাকোথেরাপি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, গোলাপ ফুলের পাপড়িতে যে পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে, তা বিপাকহারের মান উন্নত করে। যা পরোক্ষ ভাবে ‘ফ্যাট মেটাবলিজ়ম’, অর্থাৎ মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
২০১৭ সালে ‘ফাইটোমেডিসিন’ জার্নালে এই সংক্রান্ত আরও একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। গবেষকেরা বলেছেন, গোলাপ ফুলের পাপড়ির নির্যাসে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড। যা আসলে প্রদাহনাশক একটি উপাদান। ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং ওজন ধরে রাখার ক্ষেত্রে তাই গোলাপের চায়ের ভূমিকা রয়েছে।
১) গোলাপের পাপড়িতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, পলিফেনলের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। বিপাকহার ভাল রাখতে পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করে।
২) গোলাপের পাপড়ি প্রাকৃতিক ‘ল্যাক্সেটিভ’ হিসাবে পরিচিত। যা পেট পরিষ্কার রাখে, শরীরে জমা টক্সিন দূর করতেও সাহায্য করে। ফলে হজম সংক্রান্ত সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩) ‘ফাইটোথেরাপি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, গোলাপের পাপড়িতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা রক্তে শর্করার পরিমাণ সহজে বৃদ্ধি পেতে দেয় না। ইনসুলিন হরমোনের কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।
কী ভাবে তৈরি করবেন রোজ় টি?
চায়ের জন্য জল গরম করতে দিন। ফুটে উঠলে গ্যাস বন্ধ করে দিন।
এ বার শুকনো গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে দিন ওই জলের মধ্যে। পাত্রের মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
ওই ভাবে পাঁচ-সাত মিনিট রেখে দিন। তার পর ছেঁকে নিন।
চাইলে এই চায়ে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। গরমকালে এই পানীয়ে সামান্য একটু পুদিনাপাতার কুচিও ছড়িয়ে নিতে পারেন। ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে খেলে মন্দ লাগে না।