কর্পূর খেলে কী সমস্যা হতে পারে? কারা একেবারেই খাবেন না? ছবি: ফ্রিপিক।
মিষ্টি তৈরির সময়ে বা পায়েস রাঁধার সময়ে অনেকেই এক চিমটে কর্পূর মিশিয়ে দেন। দোকানেও বহু মিষ্টিতে কর্পূর দেওয়া হয়। পুজো থেকে ঘরোয়া বেশ কিছু কাজেও কর্পূরের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এখন কথা হল, কর্পূর খাবারে মিশিয়ে খেলে তা কতটা স্বাস্থ্যকর হবে। রোজ কর্পূর খেলে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই বা কী কী হতে পারে, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কর্পূরের বহুবিধ উপকারিতা আছে। ত্বকে র্যাশ বা চুলকানি হলে কর্পূরের তেলকে জলের সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে মালিশ করলে ত্বকের সমস্যা দ্রুত কমে। এগ্জ়িমা, সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের অসুখের চিকিৎসাতেও কর্পূর ব্যবহার করা হয়। আবার চুল ভাল রাখতেও কর্পূরের ভূমিকা রয়েছে। বাজারচলতি রাসায়নিক দেওয়া প্রসাধনীর বদলে কর্পূরের তেল ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। অনিদ্রার সমস্যায় যাঁরা ভোগেন, তাঁরা ঘুমোনোর আগে বালিশে কয়েক ফোঁটা কর্পূরের তেল দিয়ে ঘুমোলে অনিদ্রার সমস্যা কমতে পারে। সর্দিকাশির উপশমে কর্পূর ব্যবহার করার চল রয়েছে। তবে যদি কারও অ্যালার্জি-জনিত কোনও সমস্যা থাকে, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই কর্পূর ব্যবহার করতে হবে।
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, কর্পূর ত্বক বা চুলের জন্য ব্যবহার করেন অনেকেই। কিন্তু যদি তা নিয়মিত খেতে শুরু করেন, তা হলে এর বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতেই পারে। এক-আধ দিন পায়েসে এক চিমটে কর্পূর মিশিয়ে খাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু যদি রোজ বা প্রায়ই তা বেশি পরিমাণে খেতে শুরু করেন তা হলে শরীরের বিভিন্ন রকম ক্ষতি হতেই পারে।
কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?
পুষ্টিবিদের কথায়, দীর্ঘ সময় ধরে কর্পূর খাওয়ার অভ্যাস লিভারের ক্ষতি করে। রক্তে বিষক্রিয়া হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে কর্পূরের গন্ধ শোঁকেন অনেকে। এই টোটকা কারও ক্ষেত্রে উপকারে এলেও, সকলের ক্ষেত্রে না-ও হতে পারে। শ্বাসকষ্ট কমানোর বদলে বাড়িয়ে দিতে পারে কর্পূর। শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
কর্পূর বেশি মাত্রায় রোজ খেতে শুরু করলে তা লালার সঙ্গে মিশে সংক্রমণের কারণ হতে পারে। মাত্রাতিরিক্ত খেলে তা শরীরে টক্সিনের মাত্রাও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এমনও দেখা গিয়েছে, কর্পূর বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলে মারাত্মক নাক ও গলার সংক্রমণে ভুগেছেন অনেকে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কর্পূর খাওয়া বা ত্বক-চুলের পরিচর্যায় ব্যবহার করা উচিত নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শিশুদের কর্পূর মেশানো কোনও খাবার খাওয়ানো বা কর্পূরের তেল মাখানোও ঠিক নয়। অ্যালার্জি-জনিত কোনও রোগ থাকলে কর্পূর ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।