ঋতুবন্ধ পিছিয়ে দেওয়ার জন্য সারা বিশ্ব জুড়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। ছবি সংগৃহীত
পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই হলেই সবচেয়ে বেশি যে কথাটি মহিলাদের ভাবায়, তা হল ঋতুবন্ধ। এর কারণে অনেকেই অবসাদে ভোগেন। কিন্তু এটিও তো ঠিক যে, ঋতুবন্ধ একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যার সন্মুখীন আপনাকে এক দিন না এক দিন হতেই হবে! তবে খাওয়াদাওয়া ও জীবনযাপনের পদ্ধতির উপর নির্ভর করে তা কিছু দিনের জন্য পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
ঋতুবন্ধ ঠিক কখন হয়? জন্মের সময় প্রত্যেক মহিলার ডিম্বাশয় প্রায় ১০ লক্ষ ডিম্বাণু থাকে। ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার পর থেকেই শরীর এই ডিম্বাণুগুলিকে এক এক করে ছাড়তে থাকে, বয়স ৩০ পেরোনোর পর সংখ্যাটা কমতে থাকে। ৪০-এর পর আরও দ্রুত হারে কমে ডিম্বাণু সংখ্যা। এর সঙ্গে কমে আসে গর্ভধারণের সম্ভাবনাও। ঋতুবন্ধ হওয়ার অর্থ হচ্ছে ডিম্বাণু নিঃশেষিত এবং সেই কারণেই ডিম্বাশয়ে আর ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন তৈরি হচ্ছে না। বছর খানেক টানা ঋতুস্রাব না হলে ধরে নিতে হবে যে ঋতুবন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে এই সময়ে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলাও ভীষণ জরুরি।
প্রতীকী ছবি
ঋতুবন্ধ পিছিয়ে দেওয়ার জন্য সারা বিশ্ব জুড়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। অল্প বয়সে ডিম্বাশয় থেকে টিস্যু বার করে ফ্রিজ করে রাখা এবং বেশি বয়সে সেটি পুনরায় ডিম্বাশয়ে প্রতিস্থাপন করার প্রচেষ্টা চলছে বহুদিন। সে ক্ষেত্রে ঋতুবন্ধ বেশ কিছুদিন পিছিয়ে দেওয়া যাবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। তবে পদ্ধতিটি বেশ খরচসাপেক্ষ হয়ে দাঁড়াবে, সে বিষয় সন্দেহ নেই। তা ছাড়া, এর ফলে শরীরে কী কী সমস্যা হতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের পরিষ্কার কোনও ধারণাই তৈরি হয়নি এখনও।
তবে এ ক্ষেত্রে চিকিত্সকরা সুস্থ জীবনযাপনের উপর জোর দিতেই বলেন। মনে করা হয়, যে সকল মহিলার যৌনজীবন নিয়মিত, তাঁদের ঋতুবন্ধ দেরিতে হয়। খাদ্যতালিকায় মাছ, ডাল, সবুজ শাকসবজীর পরিমাণ বেশি রাখুন। সেই সঙ্গে নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করুন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন, হাসিখুশি থাকুন। অবসাদে ভুগবেন না। একটি বয়সের পর এই ধরনের পরিবর্তন তো আসবেই, তাই ভাল থাকার একমাত্র উপায় সুস্থ ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা। এতে ঋতুবন্ধকালীন সমস্যা বা উপসর্গগুলি একটু হলেও কমবে।