মনমেজাজ ভাল হবে নিমেষে, জানুন টিপ্স ছবি: ফ্রিপিক।
দিনভর কাজের চাপে অস্থির। রাতে ঘুমোতেও যাচ্ছেন দেরিতে। নিশ্চিন্তে যে ঘুমোবেন তারও উপায় নেই। ঘরে-বাইরে কাজ সামলে একরাশ দুশ্চিন্তা, উদ্বেগের মেঘও জমছে মনে। ঘুম চোখ খোলা মাত্রই সেই সব চিন্তাভাবনা ফের ঘিরে ধরছে আপনাকে। ফলে সকাল থেকেই বিগড়ে যাচ্ছে মনমেজাজ। কেউ চেঁচামেচি করে ফেলছেন আপনজনেদের উপরেই, আবার কেউ সারা দিন খিটখিটে মেজাজ নিয়েই থাকছেন। কোনও কাজেই মন বসছে না। কিছুই যেন ভাল লাগছে না। ঘন ঘন মেজাজও বদলে যাচ্ছে। মনোবিদেরা এই ধরনের মানসিক স্থিতিকে বলেন ‘মর্নিং অ্যাংজ়াইটি’। অনেকেই ভোগেন এই সমস্যায়। হয়তো আপনিও মিল খুঁজে পাচ্ছেন। তা হলে জেনে নিন কী করণীয়।
মনোবিদেদের পরামর্শ, মন ভাল রাখতে ছোট ছোট অভ্যাসে বদল আনতেই হবে। আপনিই পারবেন সেটি। যদি দেখেন, মন ভাল থাকছে না বা মেজাজ বিগড়ে যাচ্ছে মাঝেমধ্যেই, তা হলে এই কাজগুলি করে দেখুন। ফুরফুরে হয়ে উঠবে মন।
১. মন অশান্ত থাকলে ধৈর্য রাখাটা খুব কঠিন। দুশ্চিন্তা সহজে দূর করা যায় না। মনোবিদেরা বুঝিয়ে বলছেন, মন নিমেষে ভাল করার উপায় হল হাসি। প্রাণ খুলে হাসুন। যদি দেখেন মেজাজ ভাল নেই, তা হলে ‘জোকস’ পড়ুন অথবা কমেডি শোয়ের কোনও ক্লিপিং দেখুন। দেখবেন, কিছু ক্ষণের জন্যও মন থেকে দুশ্চিন্তাগুলি মুছে গিয়েছে।
২. আপনি কি জানেন, বেশি চিনি দেওয়া খাবার খেলে মেজাজ খারাপ হয়? তাই সকাল সকাল এমন খাবার খাবেন না। বরং ফল, শাকসব্জি খাওয়ার চেষ্টা করুন। প্রাতরাশে ওট্স, ডালিয়া বা কিনোয়া রাখতে পারেন। তার সঙ্গে মরসুমি ফল খান। বেশি চিনি দিয়ে ফলের রস বা প্যাকেটবন্দি ফলের রস খেলে কিন্তু হবে না। এমন খাবার খান, যার পুষ্টিগুণ বেশি।
৩. যাঁরা সকালে যোগাসন বা প্রাণায়াম করেন, তাঁদের মন অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি ভাল থাকে। ঘুম থেকে উঠে অন্তত কিছু ক্ষণের জন্য যোগাসন, মেডিটেশন করার চেষ্টা করুন। রোজ নিয়ম করে মিনিট ১৫ মেডিটেশন করলেও মন ভাল থাকবে। সকালে সময় না থাকলে রাতে শোয়ার আগে কিছুটা সময় ধ্যান করার চেষ্টা করুন, এতে রাতে ঘুম ভাল হবে, পাশাপাশি সারা দিনের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা অনেকটাই দূর হবে।
৪. সকাল সকাল কাজের তালিকা তৈরি করে ফেলুন। কোন কাজ কখন করবেন, ঠিক সময়ে তা শেষ হবে কি না, কিংবা এত কাজের মধ্যে কোনওটি যদি করতে ভুলে যান— এই সব নিয়ে অনেকের মধ্যেই উদ্বেগ দেখা দেয়। তাই মনোবিদেরা বলেন, কাজের সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করে নেওয়া জরুরি। তা হলেই কোনটা করছেন আর কোনটা ভুলে যাচ্ছেন, বুঝতে পারবেন নিজেই। অকারণে উদ্বেগ তৈরি হবে না।
৫. মন ভাল করার অন্যতম ভাল উপায় হচ্ছে বই। যদি দেখেন কাজে মন বসছে না, কোনও বিষয় নিয়ে আপনি খুব চিন্তিত, তা হলে কিছু ক্ষণের জন্য সেই কাজ বন্ধ করুন। সেই সময়টায় পছন্দের বই পড়ুন। এতে ধৈর্যও বাড়বে, দুশ্চিন্তা দূর হবে।
৬. গান শুনলেও মন ভাল হয়। কানে হেডফোন গুঁজে পছন্দের গান শুনুন। দেখবেন, নিমেষে মেজাজ ফুরফুরে হয়ে উঠেছে।
৭. মন বেশি খারাপ হলে পুরনো ছবির অ্যালবাম খুলে বসতে পারেন। আপনার সুখের স্মৃতিগুলি তাজা হলে ‘হ্যাপি হরমোন’-এর ক্ষরণও বাড়বে। মনমেজাজ তরতাজা হয়ে উঠবে। আপনার প্রিয় ছবিটিকে কম্পিউটারে আপলোড করতে পারেন এবং স্ক্রিনসেভার হিসাবে সেট করতে পারেন। এতে কাজের উৎসাহও বাড়বে।