Car T-Cell Therapy

রক্তের ক্যানসার নিরাময়ে কার টি-সেল থেরাপির প্রয়োগ দেশে, খরচ কমল অস্ত্রোপচারের

কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ন্যাশনাল বায়োফার্মা মিশন’ (এনবিএম)-এর উদ্যোগে ‘বায়োটেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্স কাউন্সিল’ ও মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল সেন্টার রক্তের ক্যানসারের চিকিৎসায় কার টি-সেল থেরাপির প্রয়োগ করছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:২৮
Share:

কার টি-সেল থেরাপি কী? কী ভাবে ক্যানসার নিরাময় করে? ফাইল চিত্র।

ক্যানসার চিকিৎসায় আধুনিকতম অস্ত্রোপচারের মধ্যে পড়ে ‘কার টি-সেল থেরাপি’। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে ক্যানসার সম্পূর্ণ ভাবে নিরাময়ের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেই দাবি চিকিৎসকদের। দেশে প্রথম বার মুম্বইয়ে রক্তের ক্যানসারের চিকিৎসায় ‘কার টি-সেল থেরাপি’র এক বিশেষ পদ্ধতির প্রয়োগ করা হয়েছিল। আবারও এই পদ্ধতিতে রক্তের ক্যানসারের চিকিৎসা শুরু হল। তবে এ বার এই অস্ত্রোপচারের খরচ অনেকটাই কমানো হয়েছে বলে দাবি চিকিৎসকদের।

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ন্যাশনাল বায়োফার্মা মিশন’ (এনবিএম)-এর উদ্যোগে ‘বায়োটেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্স কাউন্সিল’ ও মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল সেন্টার রক্তের ক্যানসারের চিকিৎসায় কার টি-সেল থেরাপি প্রয়োগ করছে। এনবিএম-এর ডিরেক্টর রাজ কে শিরুমাল্লা জানিয়েছেন, আমেরিকায় এই আধুনিক অস্ত্রোপচার করতে ৩-৪ কোটি টাকা খরচ পড়ে। কিন্তু ভারতে এখন এই অস্ত্রোপচারের খরচ কমিয়ে ২৫-৩০ লাখে নিয়ে আসা হয়েছে। ভবিষ্যতে খরচ আরও কমানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রক্তের ক্যানসার অনেক রকম হয়। যার মধ্যে একটি হল ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া (সিএমএল)। এটি মূলত শ্বেত রক্তকণিকার ক্যানসার। অস্থিমজ্জার যে স্টেম কোষ রক্তকণিকা তৈরি করে, সেই কোষের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি শুরু হলে তখন তা ক্যানসারের রূপ নেয়। এই ধরনের ক্যানসারকে বলা হয় ক্রনিক মায়েলোজেনাস লিউকেমিয়া। শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে এবং তা জমা হতে থাকে অস্থিমজ্জায়। সেখান থেকে রক্তের মাধ্যমে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। শ্বেত রক্তকণিকাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার খেয়াল রাখে। তাই এই রক্তকণিকার ভারসাম্যই যদি বিগড়ে যায়, তা হলে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে থাকে।

Advertisement

খুব দ্রুত ছড়াতে থাকে রক্তের এই ক্যানসার। একে নিয়ন্ত্রণ করতেই কার টি-সেল থেরাপির প্রয়োগ করছেন চিকিৎসকেরা। সম্পূর্ণ নাম ‘চিমেরিক অ্যান্টিজেন রিসেপ্টর টি-সেল থেরাপি’। এ হল এক ধরনের ইমিউনোথেরাপি। এই পদ্ধতিতে শরীরে ঘাতক টি-কোষ (প্রতিরক্ষা কোষ) বা টি-লিম্ফোসাইট কোষগুলিকে সক্রিয় করে তোলা হয়। এ ক্ষেত্রে দাতার শরীর থেকে টি-কোষ নিয়ে তাকে গবেষণাগারে বিশেষ পদ্ধতিতে বদলে শক্তিশালী করে তোলা হয়। সেই টি-কোষ তখন নিজস্ব রিসেপ্টর তৈরি করে। যার নাম 'চিমেরিক অ্যান্টিজেন রিসেপ্টর' (কার)। এই রিসেপ্টরের কাজ হল ক্যানসার কোষগুলিকে চিহ্নিত করে নষ্ট করা। তার পর এই কোষগুলিকে ক্যানসার রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, নতুন করে প্রতিস্থাপিত কোষগুলি গ্রহীতার শরীরে ঢুকে তাঁর রোগ প্রতিরোধ শক্তি কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে। ফলে ক্যানসার কোষগুলির বিভাজন ও বৃদ্ধি, দুই-ই বন্ধ হতে শুরু করে। রোগীও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠতে শুরু করেন। পাশাপাশি পরিবর্তিত টি-কোষগুলি শরীরে ঢুকে অ্যান্টিবডির মতোও কাজ করে। ফলে ক্যানসার ফিরে আসার আশঙ্কা অনেক কমে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement