সচেতনতা বৃদ্ধিতে ম্যালেরিয়া কমছে দেশে, রিপোর্ট দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ফাইল চিত্র।
ডেঙ্গির প্রকোপে ফি বছর কাবু হচ্ছে দেশের বিভিন্ন রাজ্য। পিছু ছাড়ছে না ম্যালেরিয়াও। গোটা দেশেই মশাবাহিত রোগের প্রকোপে প্রতি বছরই বহু মানুষের মৃত্যু হয়। বিশেষ করে, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাই সর্বাধিক। মৃত্যুর হারও কম নয়। ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি সমীক্ষা জানিয়েছিল, ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর হারে দেশে প্রথম ওড়িশা, দ্বিতীয় স্থানে পশ্চিমবঙ্গ। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র একটি সমীক্ষা আশার আলো দেখিয়েছে। হু-র রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারতে গত দু’বছরে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ অনেকটাই কমেছে। মৃতের সংখ্যাও তুলনামূলক ভাবে কম।
‘হু ওয়ার্ল্ড ম্যালেরিয়া রিপোর্ট ২০২৪’-এ দাবি করা হয়েছে, ২০২৩ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ম্যালেরিয়ার দাপট কমেছে। সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯৩ শতাংশ কমেছে। ম্যালেরিয়ার কারণে মৃত্যু কমেছে প্রায় ৬৮ শতাংশ। শুধু ভারত নয়, গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই ম্যালেরিয়ার প্রকোপ তুলনামূলক ভাবে কমেছে বলেই দাবি। বাংলাদেশ, নেপাল, ইন্দোনেশিয়াতেও গত বছর থেকে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেকটাই কম।
হু-র গবেষকেরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নিয়ে সচেতনতা আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। রোগটি সঠিক সময়ে চিহ্নিত করা ও তার উপযুক্ত চিকিৎসা খুব জরুরি। ম্যালেরিয়া রোগ ধরা পড়ার আলাদা কোনও লক্ষণ নেই। এই রোগের প্রথম উপসর্গ হল জ্বর। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হলে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসবে। কখনও জ্বর কমে যাবে, কখনও আবার তা তীব্র ভাবে আসবে। সেই রকম হলে সন্দেহ করা হয়, আক্রান্তের ম্যালেরিয়া হয়েছে। জ্বর হলে কোনও প্রাথমিক প্রতিষেধকের উপরে ভরসা না-রেখে আগে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার। তার পরে রক্ত পরীক্ষা করালে তবেই ম্যালেরিয়া ধরা পড়বে এবং তার উপযুক্ত চিকিৎসা হবে।
সেই সঙ্গে মশার বৃদ্ধি রোধ করতে হবে। এটাই প্রথম ও প্রাথমিক শর্ত। এর জন্য বাড়ির কোথাও জল জমতে দেওয়া যাবে না। ফুলের টব, টায়ার, ভাঙা পাত্রে জমা জলে এই রোগের মশা বংশবৃদ্ধি করে। সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাতে-দিনে শোয়ার সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। উল্লেখ্য, সরকারি বা বেসরকারি ভাবেও মশা নিয়ন্ত্রণে নানা রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।