— প্রতীকী চিত্র।
যক্ষ্মারোগ প্রতিরোধে ওষুধের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পুষ্টিকর খাবার। এ ক্ষেত্রে দেহের ওজনের ভূমিকাও কম নয় বলে জানিয়েছে আইসিএমআর এবং চেন্নাইয়ের ন্যাশনাল টিবি এলিমিলেশন প্রোগাম এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ ইন টিউবারকুলোসিস। এই সংক্রান্ত সমীক্ষা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য ল্যানসেট’ এবং ‘দ্য ল্যানসেট গ্লোবাল হেল্থ জার্নাল’-এ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র রিপোর্ট বলছে, ভারতে প্রায় প্রতি তিন মিনিটে দু’জন যক্ষ্মারোগীর মৃত্যু হয়। আক্রান্তের সংখ্যাও বহু। তাই এই রোগ নিরাময়ে জোরদার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতকে যক্ষ্মামুক্ত করার প্রতিজ্ঞা নিয়েছে ভারত সরকারও।
ভারতের এখনও এমন অনেক প্রত্যন্ত গ্রাম রয়েছে, যেখানে বসবাসকারী মানুষ দু’বেলা পেট ভরে খাবার খেতে পান না। তাই অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা মানুষগুলোর শরীরে সহজেই থাবা বসাতে পারে ক্ষয়রোগ। সম্প্রতি, ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার এক কিশোরের শরীরে যক্ষ্মারোগের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে তাকে নিয়েই শুরু হয় প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ১৮ বছরের ওই কিশোরের শরীরে যখন যক্ষ্মার ভাইরাস ধরা পড়ে, তখন তার ওজন মাত্র ছিল ২৬ কেজি। দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ওই যুবক ভুগছিলেন অপুষ্টিজনিত সমস্যায়। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রেখে ওই কিশোরকে বিগত ছ’মাস ধরে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। যার ফলে তাঁর ওজন বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ কেজি। শুধু তাই নয়, তাঁর শারীরিক পরিস্থিতিও অনেকটাই উন্নত হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
পুষ্টিকর খাবার কী ভাবে যক্ষ্মারোগে আক্রান্তদের মধ্যে বাঁচার আলো দেখাচ্ছে, তা সরেজমিনে দেখার জন্যেই ঝাড়খণ্ডের চারটি জেলায় ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত দু'টি পর্যায়ে সমীক্ষা চালানো হয়। রিডিউসিং অ্যাক্টিভেশন অফ টিউবারকুলোসিস বাই ইম্প্রুভমেন্ট অফ নিউট্রিশনাল স্টেটাস (র্যাশন) ট্রায়াল-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, যথাযথ পুষ্টি যে কোনও ধরনের যক্ষ্মারোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে ফেলতে পারে এবং এক জনের শরীর থেকে বায়ুবাহিত হয়ে অন্যের শরীরে প্রবেশ করার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। অন্য আরও একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অপুষ্টিতে ভোগা, অস্বাভাবিক ভাবে কম ওজনের যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগীদের দেহের ওজন বৃদ্ধি পেলে মৃত্যুর হার কমে আসতে পারে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত।