কী ভাবে করবেন অনন্তাসন? চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
রোজই হাঁটতে যান। মেদ ঝরাতে মাঝেমধ্যে সাইকেলও চালান। যার প্রভাব পড়ে গোটা শরীরে। কিন্তু পিঠ, কোমর কিংবা তলপেটের আলগা হয়ে যাওয়া পেশিগুলি টান টান করতে চাইলে শুধু হাঁটলে বা সাইকেল চালালে হবে না। আবার, জিমে গিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি তুলতেও অনীহা রয়েছে। তা হলে উপায়? যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, এই সমস্যা একমাত্র আসনেই আসান হতে পারে। রোজ অনন্তাসন অভ্যাস করলে এই ধরনের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
সংস্কৃতে ‘অনন্ত’ কথাটির অর্থ হল অন্তহীন, অর্থাৎ যা চিরন্তন। বিষ্ণুর নিদ্রা বা শয়নের যে ভঙ্গি, তার সঙ্গে এই আসনের মিল রয়েছে। তাই অনেকে এই ভঙ্গিকে ‘ঘুমন্ত বিষ্ণু’ নামেও চেনেন।
কী ভাবে করবেন?
· প্রথমে ম্যাটের উপর টান টান হয়ে শুয়ে পড়ুন। শ্বাস-প্রশ্বাস যেন স্বাভাবিক থাকে।
· এ বার যে কোনও এক পাশ ফিরে যান। মাথা থাকবে হাতের উপর। যে পাশে ফিরবেন, সে দিকের হাতের উপর মাথা রাখতে হবে। অর্থাৎ ডান পাশে ফিরলে মাথা থাকবে ডান হাতের তালুর উপর। ডান পায়ের উপর টান টান করে রাখুন বাঁ পা।
· বাহুমূল থেকে শুধু কনুইয়ের অংশ মাটি স্পর্শ করে থাকবে। বাহুমূল যতটা সম্ভব প্রসারিত করতে হবে। কাঁধ এবং কনুই থাকবে এক সরলরেখায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের ছন্দ বুঝে নিন।
· এ বার ধীরে ধীরে বাঁ পা উপর দিকে তুলুন। বাঁ হাত দিয়ে যেন বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুল ধরা যায়, এমন অবস্থানে নিয়ে যান। বাঁ পা এবং বাঁ হাত থাকবে সমান্তরাল ভাবে। পায়ের পাতার তলার দিক থাকবে আকাশের দিকে।
· এই অবস্থানে থাকুন ৩০ সেকেন্ড। চাইলে এক মিনিট পর্যন্ত এই ভঙ্গি ধরে রাখা যায়।
· এ বার ধীরে পা নামিয়ে পূর্বের অবস্থানে ফিরে যান। ঠিক একই ভাবে উল্টো দিকেও অভ্যাস করুন এই আসন।
কেন করবেন?
নমনীয়তা বৃদ্ধি করে। হজমশক্তি এবং বিপাকহার উন্নত করতেও সাহায্য করে। গোটা শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। মানসিক চাপ, উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই আসন অভ্যাস করা যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুচক্র শুরু এবং রজোনিবৃত্তি, এই দুই পর্যায়েই অনন্তাসনের প্রভাব রয়েছে। দেহ এবং মনের সংযোগ সাধনে এই আসনের ভূমিকা রয়েছে।
সতর্কতা:
যাঁদের কাঁধে, ঘাড়ে আগে থেকে কোনও রকম চোট বা আঘাত রয়েছে, তাঁরা এই আসন করবেন না। পিঠ পেশিতে টান লেগে থাকলে এই আসন করা নিষিদ্ধ। হাঁটু, কোমর কিংবা মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচার হয়ে থাকলে এই আসন অভ্যাস করার আগে প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে।