Sciatica Pain

কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত সুচ ফোটার মতো অনুভূতি, সায়াটিকা নয় তো? কী করে বুঝবেন?

একটি বয়সের পর পা, কোমরে ব্যথা মানেই বাত নয়। কিন্তু এমন অসহ্য ব্যথা কী কারণে হতে পারে? ছোটবেলায় এক বার পা পিছলে সিঁড়ি দিয়ে পড়ে গিয়েছিলেন, সেখান থেকেই কিছু হল নাকি?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৪২
Share:

কোমর ও নিতম্বের নীচ থেকে একেবারে পায়ের গোড়ালি অবধি চলে যায় এই ব্যথা। ছবি- সংগৃহীত

একটানা অফিসের চেয়ারে বসে কাজ। প্রয়োজনে উঠতে গেলেই কোমর থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত অসহ্য যন্ত্রণা। সেই যন্ত্রণার তীব্রতা এতটাই বেশি যে, উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতাটুকুও নেই।

Advertisement

এই ধরনের ব্যথা কিন্তু সায়াটিকা স্নায়ু থেকেও হতে পারে। তাই ফেলে না রেখে ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন। সঠিক ওষুধ এবং ব্যায়ামের সাহায্যে এই ব্যথা অনেকটাই আয়ত্তে রাখা যায়।

Advertisement

কোথায় থাকে এই স্নায়ু? এর উৎপত্তিস্থলই বা কোথায়?

‘বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্স’–এর বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “সায়াটিকা আমাদের শরীরের দীর্ঘতম ও সবচেয়ে মোটা স্নায়ু। যা শুরু হয় স্পাইন বা মেরুদণ্ড থেকে। এর একাধিক রুটের মধ্যে কিছু আসছে কোমরের নীচের দিকে ‘লাম্বার স্পাইন’ থেকে। সেখানে কোনও ভাবে আঘাত পেলেও এই ব্যথা হয়।”

এই ব্যথাকে ‘লাম্বোসায়াটিকা পেন’ও বলা হয়। আর বাকি রুটের উৎপত্তি মেরুদণ্ডের শেষ অংশ থেকে, যাকে ‘স্যাক্রাম’ বলে। এই স্নায়ুর শেষ প্রান্তগুলি একত্রিত হয়ে ডান-বাম দিকে কোমর ও নিতম্বের নীচ থেকে একেবারে পায়ের গোড়ালি অবধি চলে যায়।

কখন সাবধান হবেন?

‘ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস’-এর শল্য চিকিৎসক এবং মেরুদণ্ডের চিকিৎসক অনিন্দ্য বাসু বললেন, “ঠিক সময়ে ওষুধ খেলে, ফিজিয়োথেরাপি করলে এই ব্যথা একেবারেই নির্মূল হয়ে যায়। তবে সব রোগেরই তো বিভিন্ন পর্যায় আছে। কোন পর্যায়ে রোগী রয়েছেন, তা পরীক্ষা না করে সমাধান বলে দেওয়া যায় না। যদি এমন হয় যে যন্ত্রণা হতে হতে পা অবশ হয়ে যাচ্ছে বা মল-মূত্র ধরে রাখতে পারছেন না, তখন কিন্তু সাধারণ ব্যথা কমানোর ওষুধ, ফিজিয়োথেরাপিতে কাজ হবে না।”

কেন হয় সায়টিকার ব্যথা?

সায়াটিকার ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। গাড়িতে যেমন শক অবজ়ার্ভার থাকে তেমন মেরুদণ্ডের হাড়ের মাঝেমাঝেও ছোট ছোট ডিস্ক থাকে, যারা শক অবজ়ার্ভারের কাজ করে। কোনও কারণে যখন ডিস্ক ফেটে ভিতরের থকথকে তরল-সহ মজ্জা বেরিয়ে এসে স্নায়ুতে ধাক্কা মারে, এটিই সায়াটিকার ব্যথা হওয়ার অন্যতম কারণ।

এ ছাড়া স্নায়ুর কোনও অসুখ হলে তার থেকেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। মেরুদণ্ডের উপর কোনও টিউমার হলে তার চাপ নার্ভরুটগুলির উপরে পড়েও এই ধরনের ব্যথা হয়।

তবে ‘আর্থ্রাইটিস’ বা বাত সায়াটিকার ব্যথা বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া, দুর্ঘটনার জন্য কোমরে আঘাত পেলে বা ভেঙে গেলেও সায়াটিকা হতে পারে। অনেক সময়ে অন্তঃসত্ত্বাদের এই সমস্যা হয়। গৌতমবাবু বলেন, “এই ধরনের ব্যথা নিয়ে কোনও মহিলা রোগী আসলেই আগে বলি গৃহ সহায়িকা থাকুক বা না থাকুক, ঘর মোছা বন্ধ করে দিতে হবে। প্রয়োজনে লাঠিতে বাঁধা ঝাড়ু ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া ভারী কাজ বন্ধ ওবং টানা তিন দিন বিশ্রাম নিতেই হবে।”

কী কী করবেন না?

১) ভারী জিনিস তুলবেন না।

২) সামনে ঝুঁকে মাটিতে বসবেন না।

৩) যন্ত্রণা না কমলে তার উপর ব্যয়াম করবেন না।

৪) মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসার চেষ্টা করবেন।

৫) একটানা বসে না থেকে মাঝেমাঝে হেঁটে আসবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement