খাওয়াদাওয়ায় কিছু নিয়ম মেনেই মাইগ্রেনকে অনেকটা বশে রাখা যায়। ছবি : সংগৃহীত।
মাথা কার না ধরে? কিন্তু মাইগ্রেনের ব্যথার সঙ্গে সাধারণ মাথাব্যথার তুলনাই চলে না। মাইগ্রেনের ব্যথা শুধু ব্যথা নয়, তার সঙ্গে আরও নানা উপসর্গ নিয়ে আসে। কারও বমি হয়, কারও মাথা ঘোরে, চোখে যন্ত্রণা, ঘাড়-পিঠে অসাড়বোধও দেখা দেয় কারও কারও। সমীক্ষা বলছে, বিশ্বে ১১০ কোটি মানুষ নিয়মিত মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন। অথচ মাইগ্রেনের তেমন কোনও ওষুধও নেই। চিকিৎসকেরা বলছেন ওষুধ না থাক ওষুধ না থাক, মাইগ্রেনের রোগী কী খাচ্ছেন বা পান করছেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু খাওয়াদাওয়ায় কিছু নিয়ম মেনেই মাইগ্রেনকে অনেকটা বশে রাখা যায়।
কী কী খাবার এবং পানীয় খাওয়া দরকার?
যে সমস্ত খাবারে বেশি পরিমাণে খনিজ, ভিটামিন, ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, সেই সমস্ত খবার মাইগ্রেনের ভোগান্তি কমাতে পারে।
১। ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
২০২১ সালের একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে আমেরিকাবাসী ২০-৫০ বছর বয়সিদের মধ্যে যাঁরা ম্যাগনেশিয়াম কম খেয়েছেন, তাঁদের মাইগ্রেনের যন্ত্রণা হয়েছে বেশি। যে সমস্ত ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার মাইগ্রেনের রোগীরা খেতে পারেন, সেগুলি হল— গাঢ় সবুজ রঙের শাকপাতা, অ্যাভোকাডো, কলা, টুনা মাছ। তবে ডার্ক চকোলেটে ম্যাগনেসিয়াম বেশি থাকলেও খাওয়া যাবে না। এই খাবার মাইগ্রেনের ভোগান্তি বৃদ্ধি করতে পারে বলে মনে করেন অনেকেই।
২। ওমেগা থ্রি সমৃদ্ধ খাবার
ইলিশ, স্যামন এর মতো ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ, বিভিন্ন ধরনের বীজ, ডালজাতীয় শস্যও খেতে পারেন মাইগ্রেনের রোগীরা। তাতে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা দূরে থাকবে।
৩। ফাইবার বেশি খান
২০২২ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ফাইবার বেশি খেলে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা ফিরে আসার সম্ভাবনা কমেছে। বেশি ফাইবার রয়েছে যে সমস্ত খাবারে, সেগুলি হল— রাগি, জোয়ার, বাজরার মতো হোলগ্রেন, গোটা ফল, শাকসব্জি, আলু, বিন্স ইত্যাদি।
কোন কোন খাবার এড়াবেন?
যে কোনও প্রক্রিয়াজাত খাবার বা পানীয় এড়িয়ে চলাই ভাল।
১। হটডগ, সালামি, সসেজের মতো নাইট্রেট বেশি রয়েছে এমন খাবার।
২। মোনোসোডিয়াম গ্লুটামেট বা এমএসজি রয়েছে এমন খাবার। যেমন, প্যাকেটজাত নুড্লস।
৩। সুক্রালোজ়-এর মতো কৃত্রিম চিনি, চিজ়, পাউরুটির মতো যে কোনও মজানো খাবার।
৪। ওয়াইন, বিয়ারের মতো অ্যালকোহলজাতীয় পানীয়।
৫। দুগ্ধজাত খাবার এবং আইসক্রিম।
৬। টম্যাটো, পেঁয়াজের মতো সব্জি।
৭। ক্যাফিন রয়েছে এমন পানীয়।
৮। শুকনো ফল বা হিস্টামিন রয়েছে এমন খাবার।
৯। গ্লুটেন আছে এমন খাবার। যেমন ময়দা, আটা।
১০। চকোলেট, বাদাম, টকজাতীয় ফল, সোয়াবিন-জাত খাবার, ভিনিগার ইত্যাদি, যাতে ‘ফিনিলেথিলামিন’ নামের অ্যামিনো অ্যাসিড আছে।