অত্যধিক মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাসে রক্তে শর্করার পরিমাণ এমনিতেই বাড়তে পারে। ফাইল চিত্র।
রক্তে ডায়াবিটিস বাসা বাঁধলে রাশ টানতে হয় খাওয়াদাওয়ায়। পছন্দের অনেক খাবারই খাওয়া যায় না। খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হয় পছন্দের বেশ কিছু খাবার। বাতাসে এখন শীতেরে আমেজ। নলেন গুঁড়ের সন্দেশ, রসগোল্লা, মোয়া, পাটিসাপটার মরসুম। অথচ ডায়াবিটিস আছে বলে কোনও কিছুরই স্বাদ নেওয়া হয় না। কিন্তু তা-ও মিষ্টি খেতে যাঁরা ভালবাসেন, মাঝেমাঝে লুকিয়ে-চুরিয়েই নিতে হচ্ছে এমন অমৃতের স্বাদ। শুধু তো ডায়াবেটিক রোগী নয়, অত্যধিক মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাসে রক্তে শর্করার পরিমাণ এমনিতেই বাড়তে পারে। ডায়াবিটিস হয়ে যাওয়ার ভয়ে মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাসে তো রাশ টানা যায় না। তা হলে উপায়? মিষ্টি খাওয়ার পাশাপাশি শর্করার পরিমাণ বিপদসীমার বাইরে রাখতে কয়েকটি নিয়ম যদি মেনে চলা যায়, তাহলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
শরীরচর্চা
অনেক অনিয়ম করেও সুস্থ থাকা যায়, যদি রোজ সময় বার করে শরীরচর্চা করেন। ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকরা শরীরচর্চা করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাতে কিছুটা হলেও শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়ম করে যদি মিষ্টি খেয়ে থাকেন, তা হলে নিয়ম করে শরীরচর্চাও করতে হবে। না হলে সমস্যা হতে পারে। বিয়েবাড়িতে গিয়ে একটার বদলে তিনটে রসগোল্লা খেয়ে নিয়েছেন ভাল কথা। কিন্তু পরের দিন অন্তত ৩০ মিনিট সময় বার করুন শরীরচর্চার জন্য।
বেশি করে শাকসব্জি খান
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোজের পাতে বেশি করে রাখুন সবুজ শাকসব্জি। এখন শীতকালে বাজারে গেলেই মিলবে রকমারি সব্জি। সেগুলি পাতে রাখার চেষ্টা করুন। মিষ্টি খেয়ে যাতে শরীরের কোনও সমস্যা তৈরি না হয়, তার জন্য বেশি করে খান শাকসব্জি। করলা খান বেশি করে। ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ করলা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
ডায়াবিটিসের আশঙ্কা কমাতে মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন। মিষ্টি খাচ্ছেন মানেই ডায়াবিটিস রক্তে জাঁকিয়ে বসবে তার কোনও মানে নেই। তবে সাবধান থাকতে তো দোষ নেই। মানসিক চাপে থাকলে কর্টিসল হরমোন উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যায়। একে হরদম মিষ্টি খাচ্ছেন, তার উপর কর্টিসল হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া— সব মিলিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা প্রভাবিত হতে পারে।
বাদাম খান
ডায়াবিটিস রোগীদের রোজের খাবারে বাদাম রাখার কথা বলে থাকেন চিকিৎসকরা। বাদাম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস শরীরের পক্ষে ভাল নয়। শীতকালে এমন রকমারি সব মিষ্টি হাতের সামনে থাকলে মনকে সামাল দেওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। মনের খেয়াল রাখার পাশাপাশি দেখাশোনা করতে হবে শরীরেরও। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা যাতে বেড়ে না যায়, তার জন্য রোজ সকালে ভেজানো বাদাম খেতে পারেন। উপকার পাবেন।