দাড়ির খোঁচা লেগে সঙ্গীর গাল, গলা, ঠোঁটের চারপাশ লাল হয়ে উঠতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
‘দূরের ঘাস সবুজ’, অর্থাৎ দূর থেকে অনেক কিছুই দেখতে ভাল লাগে। কাছে এলে বোঝা যায় আসলে তা কেমন।
এই যেমন পুরুষদের চাপদাড়ি!
পুরুষ সঙ্গীর চাপদাড়ি নিয়ে মহিলাদের মনে ‘চাপানউতর খেলা’ চলতেই থাকে। কিন্তু ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে সেই চাপদাড়ি উল্টো দিকের মানুষটির গাল, গলা কিংবা ঠোঁটের সংস্পর্শে এলে র্যাশ বেরোতে শুরু করে, লাল হয়ে যায়। জ্বালাও করতে থাকে। দেখে মনে হয় অ্যালার্জি হয়েছে। কিন্তু সহজে তা সারতে চায় না।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এ খুব সাধারণ বিষয়। তবে ত্বকের এই ধরনের সমস্যাকে নিছক অ্যালার্জি বলে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় ত্বকের এই ধরনের সমস্যাকে ‘বিয়ার্ড বার্ন’ বলা হয়। দিল্লির এক বেসরকারি সংস্থার চর্মরোগ চিকিৎসক ভিনু জিন্দাল বলেন, “বিয়ার্ড বার্ন আসলে এক ধরনের ডার্মাটাইটিস। স্পর্শকাতর ত্বক কোনও ভাবে দাড়ির সংস্পর্শে এলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে শুধুমাত্র চুম্বন নয়, দাড়ি আছে এমন গালে গাল ঠেকলেও কিন্তু বিয়ার্ড বার্ন হতে পারে। এমনকি গোপনাঙ্গের রোম থেকেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।” সাধারণ ঘরোয়া টোটকায় তা সেরেও যেতে পারে। তবে সমস্যা গুরুতর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
বিয়ার্ড বার্ন হলে কী কী সমস্যা হয়?
১) ত্বকের নির্দিষ্ট কোনও অংশ লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে। যা সাধারণ চোখে দেখে অ্যালার্জি বলে মনে হয়। কিন্তু আসলে তা নয়।
২) ত্বকে র্যাশের মতো ছোট ছোট দানা বেরোতে পারে। অনেকেরই ক্ষতস্থানে জ্বালার অনুভূতি হয়। গাল বা ঠোঁটের আশপাশের যে অংশে দাড়ির ছোঁয়া লেগেছিল, সেই অংশের চামড়া অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে। অনেক সময়ে সেখান থেকে খোসাও ওঠে।
৩) মুখের ওই অংশের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে গেলে অনেক সময়ে চুলকায়।
ঘরোয়া টোটকায় এই সমস্যার সমাধান করা যায় কি?
১) ত্বকের যে কোনও রকম অস্বস্তি কমাতে ব্যবহার করা যায় অ্যালো ভেরা। এই ভেষজের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ত্বকের প্রদাহ নিরাময়ে সাহায্য করে। পাশাপাশি আর্দ্রতা ধরে রাখতেও সাহায্য করে।
২) ক্ষতস্থানে বরফ বা ঠান্ডা জলের সেঁক দেওয়া যেতে পারে। ত্বকের লালচে ভাব, অ্যালার্জি-জনিত সমস্যা এড়াতে অনেকটা সাহায্য করে এই টোটকা।
৩) নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের প্রলেপেও কাজ হতে পারে। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এই তেলগুলি। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ার প্রবণতা কমে। অস্বস্তিও খানিকটা এড়ানো যায়।
৪) অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানে ভরপুর মধু। যে কোনও প্রকার সংক্রমণ সারাতে সাহায্য করে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি। তাই ক্ষতস্থানে মধুর প্রলেপও দেওয়া যায়।
৫) স্নানের জলে ওটমিল মিশিয়ে নিলেও কাজ হতে পারে। ক্ষতস্থানে প্রদাহজনিত লালচে, ফোলা ভাব নিরাময় করে এই টোটকা।