আমরা অনেকেই জল খাওয়ার কোনও হিসাবই রাখি না। ছবি: সংগৃহীত
শরীরে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বার করতে আর শরীরের ভিতরের জলের ভারসাম্য বজায় রাখতে ঠিক পরিমাণে জল পান করা প্রয়োজন। অথচ আমরা অনেকেই জল খাওয়ার কোনও হিসাবই রাখি না। ওষুধ, খাবার সবই সময় মেনে, মাপ মতো খাওয়া হয়। কিন্তু জলের বেলায় সব হিসাবই যেন গোলমাল হয়ে যায়। আপনার মনে হতেই পারে জল খাওয়ার আবার হিসাব আছে না কি? খেলেই হল! এমন অনেকেই আছেন যাঁরা সারা দিনে বোতলের পর বোতল জল খেয়ে ফেলেন, আবার কেউ এক বোতল শেষ করতেই হাঁপিয়ে ওঠেন।
জল খাওয়ার পরিমাণ নিয়ে নানা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। অনেকেই ভাবেন, অতিরিক্ত জল খেলেই বুঝি সব শারীরিক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই ধারণা মোটেই ঠিক নয়। এক জন সাধারণ মানুষ, যাঁর কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে এবং হার্ট ও লিভারেরও কোনও বড় অসুখ নেই, তাঁর সাধারণত দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার তরলের প্রয়োজন হয়। তরল মানে কিন্তু শুধু মাত্র জল নয়। যিনি দিনে অনেক বার চা খান, তাঁকে সেই মাপটাও নিতে হবে। ফলের রসও এর মধ্যে পড়ে। এমনকি খাবারের সঙ্গেও বেশ খানিকটা জল ঢোকে আমাদের শরীরে। মাপতে হবে সেটিও!
প্রতীকী ছবি
সারা দিনে ঠিক কতটা পরিমাণ জল খাওয়া উচিত?
পুষ্ঠিবিদদের মতে, আপনার ওজনের উপর নির্ভর করবে দিনে ঠিক কতটা পরিমাণ জল খাবেন। এক ব্যক্তি যাঁর ওজন ৮০ কেজি তাঁকে ৬০ কেজি ওজনের কারও তুলনায় বেশি জল খেতে হবে। আপনার মোট ওজনকে ৩০ দিয়ে ভাগ করুন। ভাগের ফলাফলই বলে দেবে আপনার আদতে ঠিক কতটা পরিমাণ জল খাওয়া উচিত। অর্থাৎ, আপনার ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, তা হলে আপনাকে সারা দিনে দু’লিটার জল খেতে হবে। আপনার ওজন ৮০ কেজি হলে আপনাকে ২.৬ লিটার জল খেতে হবে।
শরীরচর্চার সময়ে: শরীরচর্চার সময়ে আমাদের ঘাম ঝরে। ফলে, অতিরিক্ত জল শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। সেই ঘাটতি মেটাতে ব্যয়ামের কিছু ক্ষণ আগে এবং পরে জল খাওয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যদি ঘণ্টা খানেকের বেশি সময় ধরে শরীরচর্চা চলে, তা হলে আপনাকে প্রায় ৭০০ মিলিলিটার জল বেশি খেতে হবে। শুধু জল না খেয়ে ‘স্পোর্টস ড্রিঙ্ক’-ও চলতে পারে।
ঠিক একই ভাবে, যাঁদের দিনের বেশির ভাগ সময়টা বাইরে কাজ করতে হয়, তাঁদের জলের প্রয়োজনও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জায়গায় বসে কাজ করা মানুষদের চেয়ে বেশি।