মাংস খান তবে মেপে, কতটুকু জেনে নিন। ছবি: সংগৃহীত।
ভোজনরসিকদের পুক্ষে পাঁঠার মাংস একেবারে ছেঁটে ফেলা দুরূহ। পাঁঠার মাংস মানেই তেলে-ঝালে তাকে কষিয়ে রান্না করা। আর কষা পাঁঠার মাংস যদি প্রায়ই খেতে শুরু করেন, তা হলে তা টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, পাঁঠার মাংসে প্রচুর পরিমাণে 'হিম আয়রন' আছে যা বেশি মাত্রায় শরীরে গেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বহুগুণে বেড়ে যেতে পারে। হিমোগ্লোবিন ও মায়োগ্লোবিন থেকে তৈরি হয় 'হিম আয়রন' যার কাজ হল কোষে কোষে অক্সিজেন বয়ে নিয়ে যাওয়া।
মাছ, মাংস, ডিমেই 'হিম আয়রন' থাকে। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, রেড মিটে, অর্থাৎ গরু, শুয়োর, পাঁঠা, ভেড়া ইত্যাদির মাংসে হিম আয়রনের পরিমাণ বেশি। রয়েসয়ে রেড মিট খেলে কোনও ক্ষতি নেই। বরং শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হবে। রক্তাল্পতার সমস্যা কমবে। কিন্তু যদি প্রচুর তেলমশলা দিয়ে মাংস খেতে শুরু করেন, তখন এই হিম আয়রনের উল্টো প্রভাব পড়বে। এর মাত্রা বেড়ে গিয়ে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়বে।
শুধু তা-ই নয়, নিয়মিত ও প্রচুর পরিমাণে খেতে শুরু করলে মাংসের কারনিটিন নামের উপাদান ভেঙে গিয়ে ট্রাইমিথাইল্যামিন যৌগে পরিণত হবে। যা আবার রক্তে শোষিত হয়ে ও লিভারের বিপাক ক্রিয়ায় ভেঙে পরিণত হবে ট্রাইমিথাইল্যামিন-এন-অক্সাইডে৷ যার ফলে হার্টের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম রক্তনালিতে চর্বি জমে ইসকিমিক হৃদ্রোগের কারণও হয়ে উঠবে। তবে, যদি ন’মাসে-ছ’মাসে চর্বি ছেঁটে মাংস খান ও দু’-এক টুকরোয় সন্তুষ্ট থাকেন, তা হলে খাওয়া যেতেই পারে।
পাঁঠার মাংস কতটুকু খাবেন
যদি প্রতি সপ্তাহে খেতে হয়, তা হলে সপ্তাহে এক দিন দু’-চার টুকরো খেতে পারেন৷ মাংস কেনার সময়ে চর্বি বাদ দিয়ে কিনবেন। যে অংশে চর্বি কম আছে, সেই অংশ থেকে মাংস কিনুন, যাকে বলে ‘লিন কাট’৷ লিন কাট থেকেও যতটুকু চর্বি দেখা যাবে, তা-ও ছেঁটে ফেলুন ও মাংস কষানোর পর ভেসে ওঠা তেল ফেলে দিন৷ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে এক টুকরোও খাওয়া যাবে না।
রান্নায় কম তেল দিতে হবে। স্ট্যু বানিয়ে খাওয়া সবচেয়ে ভাল। কম নুনে রান্না করুন। মেটে বেশি খেলে কোলেস্টেরল বাড়বে। কাজেই নিয়মিত খাবেন না৷ তবে মেটেতে আয়রন ও ভিটামিন বেশি থাকে বলে মাসে এক-আধ বার খেতে পারেন।