রাতের কোন অভ্যাসে অজান্তেই ওজন বাড়ছে? ছবি: শাটারস্টক।
ওজন কমাতে চাইলেই রীতিমতো কাঠখড় পোড়াতে হয় সকলকেই। খাওয়াদাওয়ায় রাশ টানা থেকে শরীরচর্চায় মনোযোগ— নজর দিতে হবে সব দিকেই। কিন্তু কেউ যদি আপনাকে বলেন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ওজন ঝরিয়ে ফেলা যায়, তার চেয়ে বড় সুখবর কি আর কিছু হতে পারে! ছেলেবেলায় মায়েরা বলতেন, বেশি ঘুমোলে নাকি মোটা হয়। তা হলে কোনটা ঠিক?
সত্যিই কি ঘুমের সঙ্গে ওজন কমার কোনও যোগাযোগ আছে? আসলে আমরা ঘুমিয়ে থাকলেও ঘুমের মধ্যে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তাদের মতো কাজ চালিয়ে যায়। ফলে কিছু ক্যালোরি খরচ হয়। শক্তিও খরচ হয়। তা ছাড়া, সারা রাত আপনার শরীরে বাড়তি জল, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং ঘামের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাই ‘ওয়াটার ওয়েট’ ঝরে যায়। সে কারণেই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যদি ওজন মাপেন, তা হলে খানিকটা কম দেখাবে আপনার ওজন। এই সব কারণেই রাতের পর রাত ভাল ঘুম না হলে শুধু যে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাবে, তা নয়, আপনার ওজনও বেড়ে যেতে পারে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দিনে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার কম ঘুমের কারণে যে যে সমস্যাগুলি দেখা যায়, তার মধ্যে ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা অন্যতম। কম ঘুমোলে বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে, সে কারণেই ওজন বাড়ে। জেনে নিন ঘুমের সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি কিংবা হ্রাসের সম্পর্ক ঠিক কী।
রাত জাগলেই গভীর রাতে টুকটাক খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। ছবি: শাটারস্টক।
১) কম ঘুমোলে ঘ্রেলিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এর ফলে খিদে বেড়ে যায়। কমে লেপটিনের পরিমাণ, যার কাজ ব্রেনকে পেট ভরে যাওয়ার সঙ্কেত দেওয়া। ঘুম কম হলে অজান্তেই আমরা বেশি খাওয়া শুরু করি। আবার কম ঘুমের ফলে মানসিক চাপ বাড়ে ফলে ক্ষরিত হয় স্ট্রেস হরমোন কর্টিজোল। ক্যালোরি খরচ কমে যায়। এতেও ওজন বেড়ে যায়।
২) রাত জাগলেই গভীর রাতে টুকটাক খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। সে খাবারও আবার সচরাচর কার্বোহাইড্রেটে ভরপুর থাকে। চিপ্স, নরম পানীয়, কেক-পেস্ট্রি, কুকিজ় আরও কত কী! এই সব খাবার খেলে ওজন বেড়ে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক।
৩) ঘুম কম হলে সারা দিন ক্লান্তি ভাব কাজ করে। কোনও কাজ করতেই ইচ্ছে করে না। ফলে শরীরচর্চা করার প্রতিও অনীহা বাড়ে। শরীর সচল না রাখলে মেদ ঝরানো কখনওই সম্ভব নয়।