ঘি খাঁটি কি না বুঝবেন কী করে? ছবি: সংগৃহীত।
গরম ভাতের সঙ্গে এক চামচ ঘিয়ের মেলবন্ধনে অপূর্ব স্বাদ তৈরি হয়। তবে শুধু খাবারের স্বাদ কিংবা সুগন্ধ যোগ করাই নয়, ঘিয়ের স্বাস্থ্যগুণও অনেক। খাঁটি ঘি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ। এ ছাড়াও ঘিয়ে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন, খনিজ। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। পেশিগুলিকে শক্তিশালী করে। হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতেও ঘিয়ের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু ভেজালের যুগে ভাল ঘি চিনে নেওয়াটাও জরুরি। সম্প্রতি, তিরুপতি মন্দিরের লাড্ডুতে পশুর চর্বি মেশানো ঘিয়ের ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে দেশজোড়া বিতর্ক শুরু হয়েছিল। ভেজাল ঘি খেলে ফল হতে পারে ঠিক উল্টো। শরীরের পক্ষে কতটা ক্ষতিকারক হতে পারে?
বাজারে ঘি বলে যেগুলি বিক্রি হয়, সেগুলি সব খাঁটি নয়। বেশির ভাগ শিশিতেই ঘিয়ের ছদ্মবেশে প্রচুর পরিমাণে বনস্পতি (ডালডা) ও পাম তেল ভরা থাকে। ভেজাল ঘিয়ে কৃত্রিম রং, সুগন্ধি, রাসায়নিকও মেশানো হয়। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খাঁটি ও ভেজাল ঘিয়ের তফাত বোঝা দুষ্কর হয়ে ওঠে। এ ছাড়া ভেজাল ঘিয়ে মেশানো হয় প্যারাফিন, ডিটারজেন্টের মতো ক্ষতিকর উপাদান।
ভেজাল মিশ্রিত ঘি খেলে শরীরের কী কী ক্ষতি হতে পারে?
১) হজমের সমস্যা:
চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু দিন ধরে ভেজাল ঘি দেওয়া খাদ্যদ্রব্য পেটে গেলে হজমশক্তি কমে আসে। বমি বমি ভাব, বমি, ডায়েরিয়া, পেটব্যথা ইত্যাদি সমস্যা শুরু হয়।
২) বিষক্রিয়া:
প্যারাফিন, ডিটারজেন্ট ইত্যাদি মেশানো ভেজাল ঘি খেলে বিষক্রিয়া তো হবেই। পেটে ব্যথা বা জ্বালাযন্ত্রণার কারণই হয়তো বুঝতে পারলেন না। এই ভাবে ধীরে ধীরে শরীরের ক্ষতি করে ভেজাল ঘি।
৩) অ্যালার্জি:
যাঁদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি ঘি বিষের তুল্য। আবার সুস্থ মানুষও হঠাৎ করে অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগতে পারেন ভেজাল ঘিয়ের কারণে। এখানেই শেষ নয়, দীর্ঘ দিন ধরে ভেজাল ঘি পেটে গেলে হরমোনের সমস্যা থেকে যকৃতের নানাবিধ অসুখ হতে পারে।
খাঁটি ঘি চিনবেন কী করে?
১) হাতের তালুতে এক চামচ ঘি নিন। যদি ঘি গলতে শুরু করে, তবে তা খাঁটি। সাধারণত খাঁটি ঘি শরীরের তাপমাত্রায় গলতে থাকে। আর ভেজাল হলে তা চটচটে এবং মোমের মতো হয়।
২) ঝাঁজে ভুলবেন না। নকল বা ভেজাল ঘিয়ে অনেক সময় ঝাঁঝালো জিনিস মিশিয়ে আকর্ষণীয় করা হয়। ভাল ঘিয়ের ঘন্ধ হবে মৃদু, তীব্র নয়। আর আসল ঘিয়ের গন্ধ অনেক ক্ষণ থেকে যায়। তাই গন্ধে না ভুলে হাতে নিয়ে পরীক্ষা করে নিতে পারেন।
৩) খাঁটি ঘি সাধারণ তাপমাত্রায় গলতে থাকে। হাতে নেওয়ার পরেও যদি ঘি গলতে শুরু না করে, তবে বুঝবেন তাতে ভেজাল আছে।
৪) খাঁটি ঘিয়ের রং হালকা সোনালি। তাই রঙে যদি তারতাম্য দেখেন, সাবধান! যদি তেল, বনস্পতি মিশিয়ে ভেজাল ঘি তৈরি হয়, তা হলে সেগুলির আলাদা আলাদা স্তর তৈরি করে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি স্তরের রং হবে আলাদা আলাদা।