সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও নিয়মিত শরীরচর্চা করে ব্রেন টিউমর ঠেকানো যায়। প্রতীকী ছবি।
মাথা থাকলে মাথাব্যথা হয়। সে আর নতুন কথা কী! কিন্তু মাথার যন্ত্রণার সঙ্গে যদি থাকে বমি, ভুলে যাওয়া ও আচমকা চোখের সামনে অন্ধকার নেমে আসার মতো উপসর্গ, তবে সতর্ক হতে হবে বইকি! অনেক সময়ে এ সব মস্তিষ্কের টিউমরের উপসর্গ হতে পারে।
আসলে ‘ব্রেন টিউমর’ শব্দটি কানে এলেই ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। অথচ উপযুক্ত চিকিৎসার সাহায্য নিয়ে ব্রেন টিউমরের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া খুব কঠিন নয়। তবে টিউমর যদি ক্যানসার-যুক্ত হয়, তা হলে তো চিন্তা থেকেই যায়। চিকিৎসকদের মতে, ঠিক সময়ে রোগ শনাক্ত করে সার্জারির মাধ্যমে মস্তিষ্কের টিউমর বাদ দিয়ে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দেওয়া যায়।
কোন কোন অভ্যাস ব্রেন টিউমরের ঝুঁকি বাড়ায়?
এই অসুখের সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে বংশে থাকলে এই রোগের ঝুঁকি থাকে। যাঁদের রেডিয়েশনের মধ্যে থাকতে হয়, তাঁদের ব্রেন টিউমরের ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে বেশি। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মোবাইল টাওয়ার ও ইয়ার ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে ব্রেন টিউমরের ঝুঁকি বাড়ে। কিছু কিছু রাসায়ানিকের প্রভাবেও ক্যানসার-যুক্ত ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে যাঁদের কাজের সূত্রে নিয়মিত রাসায়ানিকের সংস্পর্শে থাকতে হয়, তাঁদের এই রোগের ঝুঁকি অনেক বেশি। ডায়েটে উচ্চ মাত্রায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকা, ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতিও এই রোগ ডেকে আনতে পরে। এ ছাড়া, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টিউমরের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও নিয়মিত শরীরচর্চা করে ব্রেন টিউমর ঠেকানো যায়। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত। রেডিয়েশনের ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। কোনও সমস্যা হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
যাঁদের রেডিয়েশনের মধ্যে থাকতে হয়, তাঁদের ব্রেন টিউমরের ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে বেশি। প্রতীকী ছবি।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?
১) এই অসুখের অন্যতম লক্ষণ তীব্র মাথার যন্ত্রণা। তবে টিউমর হলে মাথাব্যথার ধরনটা অন্য রকম হয়। এ ক্ষেত্রে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তীব্র মাথার যন্ত্রণা করে।
২) জ্বর বা অন্য কোনও কারণ ছাড়া হঠাৎ হঠাৎ কাঁপুনি শুরু হতে পারে। কিছু ক্ষণ পর আপনা থেকেই কমে যায়। হজমের সমস্যা না থাকলেও হঠাৎ বমি পায়।
৩) খুব সাধারণ ও সাম্প্রতিক ঘটনার কথা বেমালুম ভুল হয়ে যায়। কিছুতেই মনে পড়ে না। সারা দিন ঘুম ঘুম ভাব থাকে, ঝিমুনি থাকে, আলস্য আসে।
৪) মস্তিষ্কের কোন অংশে টিউমর হয়েছে তার উপরেও কিছু কিছু লক্ষণ নির্ভর করে। যেমন সেরিব্রামের টেম্পোরাল লোবে টিউমর হলে দেখতে অসুবিধে হয়।
৫) হাত-পা নাড়াচাড়া করতে সমস্যা ও হাঁটাচলায় ভারসাম্য রক্ষা করার অসুবিধা হতে পারে। হাত দিয়ে কোনও জিনিস শক্ত করে ধরতে সমস্যা হয়। ঢোক গিলতে ও খাবার খেতে অসুবিধা হতে পারে।
৬) ভাবনা ও বলার মধ্যে সামঞ্জস্য হারিয়ে যায়।